নিউজ ডেস্ক
ওল্ড ট্রাফোর্ডে কাল চ্যাম্পিয়ন্স লিগে বাঁচা মরার লড়াইয়ে বায়ার্ন মিউনিখের মুখোমুখি হয়েছিল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আশা ভঙ্গ হয়েছে স্বাগতিক সমর্থকদের। বায়ার্নের কাছে ১-০ গোলে পরাজিত হয়ে গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নিয়েছে রেড ডেভিলসরা। বুন্দেস লিগা চ্যাম্পিয়নদের হয়ে একমাত্র গোলটি করেছেন কিংসলে কোম্যান।
ছয় ম্যাচে মাত্র এক জয়ে তলানির দল হিসেবে সান্তনার ইউরোপা লিগেও জায়গা করতে পারেনি ইউনাইটেড। ৬ ম্যাচে ১৬ পয়েন্টসহ সুস্পষ্ট ব্যবধানেই গ্রুপের শীর্ষস্থান দখল করেছে বায়ার্ন। ইউরোপের এলিট এই প্রতিযোগিতা থেকে একটু আগে ভাগে বিদায়ে বেশ অস্বস্তিতে পড়েছে ইউনাইটেড। যে কারনে ম্যানেজার এরিক টেন হাগের ওপরও চাপ বেড়েছে। প্রিমিয়ার লিগে এই মুহূর্তে টেবিলের ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে ইউনাইটেড।
গ্রুপের অপর দুই দল কোপেনহেগেন ও গ্যালাতাসারের বিপক্ষে চার ম্যাচের তিনটিতে জয়ী হতে ব্যর্থ হওয়ায় ইউনাইটেডের জন্য কার্যত তখনই চ্যাম্পিয়ন্স লিগের আশা শেষ হয়ে গিয়েছিল। গত মঙ্গলবার দিনের আরেক ম্যাচে কোপেনহেগেন ১-০ গোলে গ্যালাতাসারেকে পরাজাতি করে শেষ ষোল নিশ্চিত করেছে। টার্কিশ ক্লাব গ্যালাতাসারে তৃতীয় স্থানে থেকে আসর শেষ করেছে। ম্যাচ শেষে টেন হাগ বলেছেন, ‘আমরা টুর্নামেন্ট থেকে আজ ছিটকে যাইনি, এটা অন্তত স্পষ্ট। আমি মনে করি কোপেনহেগেন ও গ্যালাতাসারের বিরুদ্ধে আমরা সুযোগ কাজে লাগাতে পারিনি। আমরা জয়ের পথেই ছিলাম অনেক গোলও করেছি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা ধরে রাখতে পারিনি।’ এনিয়ে চতুর্থবারের মত ইংলিশ দলটি তলানিতে থেকে চ্যাম্পিন্স লিগের গ্রুপ পর্ব শেষ করেছে। শনিবার ঘরের মাঠে বোর্নমাউথের কাছে ৩-০ গোলে প্রিমিয়ার লিগে বিধ্বস্ত হওয়ায় টেন হাগের ওপর নতুন করে চাপ এসেছে।
আয়াক্সের সাবেক এই বস প্রায় দুই মাস পর রাফায়েল ভারানেকে মূল একাদশে খেলিয়েছেন। এই ফ্রেঞ্চম্যান কোন এক অজানা কারনে টেন হাগের বিবেচনায় মূল দলে আসতে পারছিলেন না। সোমবার হ্যারি ম্যাগুয়েরে ও লুক শ ইনজুরির তালিকা দীর্ঘ করায় ভবিষ্যতে ভারানের ওপরই কোচকে আস্থা করতে হবে। টেন হাগ বলেন, ‘আমরা বারবারই খেলোয়াড় হারাচ্ছি। ইতোমধ্যেই মার্কাস রাশফোর্ড, লিসান্দ্রো মার্টিনেজ ও কাসেমিরো দলের বাইরে রয়েছেন। এবারের আসরে বেশ কিছু ম্যাচে আমরা সব খেলোয়াড়কে পাইনি।’ গ্রুপ-এ’র বিজয়ী দল হিসেবে আগেই নক আউট পর্ব নিশ্চিত হয়েছিল বায়ার্নের। বুন্সেসলিগায় শেষ ম্যাচে এইনট্র্রাখট ফ্রাংকফুর্টের কাছে ৫-১ গোলে বিধ্বস্ত হবার পর থমাস টাচেলের দলের নিজেদের প্রমানের প্রয়োজন ছিল।
টাচেল বলেন, ‘ওল্ড ট্র্রাফোর্ডে খেলা কখনই স্বস্তিদায়ক হয়না। কিন্তু আমি মনে করি এই জয়টা আমাদের প্রাপ্য ছিল। আমাদের ফিরে আসাটা জরুরী ছিল।’ ইংল্যান্ডে ফিরে আসার ম্যাচে হ্যারি কেন মূল দলেই খেলেছেন। জয়সূচক গোলে কেনেরও অবদান ছিল। তার সহযোগিতায় কোম্যান গোলরক্ষক আন্দ্রে ওনানাকে সহজেই পরাস্ত করেন। ২০১৭ সালের পর থেকে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের গ্রুপ পর্বে অপরাজিত রয়েছে বায়ার্ন। এছাড়া টানা নয়টি এ্যাওয়ে ম্যাচে জয়ী হয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে গ্রুপ পর্বেও নতুন রেকর্ড গড়েছে বায়ার্ন। আগামী বছরের নক আউট পর্বকে সামনে রেখে কেন বলেছেন, ‘সপ্তাহের শেষে বড় ব্যবধানে পরাজয়ের পর ইউনাইটেডকে হারানোর ম্যাচ থেকে আমরা অনুপ্রেরণা পেতেই পারি। আমি মনে করি নক আউট পর্বে আমাদের কঠিন লড়াইয়ের মুখোমুখি হতে হবে।
মৌসুমের শুরুটা আমাদের ভাল হয়েছে। কিন্তু আরো বেশ কিছু জায়গায় উন্নতির প্রয়োজন আছে। শ’র দুরপাল্লা প্রচেষ্টা সহজেই রুখে দেন ম্যানুয়েল নয়্যার। প্রথমার্ধে এই একটি শটই টার্গেটে নিতে পেরেছিল ইউনাইটেড। কিন্তু বিরতির সময় শ’কে ও প্রথমার্ধের মাঝামাঝিতে ম্যাগুয়েরেকে হারিয়ে ইউনাইটেড এলোমেলো হয়ে যায়। রোববার লিভারপুল সফরকে সামনে রেখে ইনজুরির তালিকা টেন হাগকে দু:শ্চিন্তায় ফেলেছে। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে ব্রুনো ফার্নান্দেস সহজ একটি সুযোগ নষ্ট করেন। ম্যাচ শেষের ১৯ মিনিট আগে কেনের ফ্লিকে থমাস মুলারের পাসে কোম্যান মৌসুমের পঞ্চম গোলে বায়ার্নকে জয় উপহার দেন।