শিরোপা চান না মোহামেডান

নিউজ ডেস্ক

ফেডারেশন কাপ ফুটবল ফাইনালে ওঠে আবাহনীর মুখোমুখি হয়েছিল মোহামেডান। দেশের ফুটবলে সাড়া পড়ে ছিল সাত মাস আগে। বিশেষ করে মোহামেডান চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় নতুন হাওয়া লেগেছিল ক্লাব ফুটবলের পালে। সাত মাস ব্যবধানে স্বাধীনতা কাপের ফাইনালে ওঠে ফুটবলের ঘ্রাণ ছড়ায় মোহামেডান, আবারও সাদাকালো সমর্থকদেরও হাতছানি দেয়। একবার বসুন্ধরা কিংসকে বিদায় করে আরেক বার আবাহনীকে বিদায় করে মোহামেডান।

তারপরও প্রশ্ন উঠছে মোহামেডান লিগ শিরোপা পাবে কবে। মোহামেডান সমর্থকরা লিগ ট্রফি জয়ের আনন্দ করবে কবে। গত লিগে চতুর্থ হয়েছিল মোহামেডান। কিন্তু সাদাকালো সমর্থকরা ট্রফি দেখতে চায়। দেশের ফুটবলে একটা কথা প্রচলিত মোহামেডান-আবাহনীর টার্গেট হচ্ছে চ্যাম্পিয়ন হওয়া। সেখান থেকে মোহামেডান এখনো অনেক দূরে। বিশেষ করে পেশাদার ফুটবলের যুগে মোহামেডান চ্যাম্পিয়ন হতে পারেনি। লিগের ট্রফি সোনার হরিণ হয়ে গেছে মোহামেডানের জন্য। বসুন্ধরা কিংস সহ অন্যান্য ক্লাব যেভাবে ফুটবলে শক্তিশালী দল গঠন করছে সেই তুলনায় মোহামেডান অনেক পিছিয়ে। লিগ শিরোপা জয়ের মতো দল এটা না, সে কথা ক্লাব সমর্থকরা বুঝতে পারছেন। আফসোস আছে কোচ আলফাজ আহমেদ, ম্যানেজার ইমতিয়াজ আহমেদ নকীবের। সাবেক ফুটবলার আছেন এখন মোহামেডান ফুটবল কমিটিতে। তাতে লাভ কী। ট্রফি জয়ের মতো দল গঠন করা হয়নি।

আগামীতেও ট্রফি জয় করার মতো করে দল গঠন করা হবে কি না, সেটাও কারো জানা নেই। মোহামেডানের অভ্যন্তরে বিভিন্ন সূত্রে কথা বলে জানা যায় চ্যাম্পিয়ন হওয়ার টার্গেট করে দল গঠন করার কোনো পরিকল্পনা নেই বর্তমান মোহামেডানের। সাত মাসে দুই দুটি ফাইনাল খেলে সাদাকালো সমর্থকদের মধ্যে যেভাবে প্রাণ ফিরিয়ে আনা হয়েছিল সেই প্রাণের প্রদীপ আবার নিভতে শুরু করেছে। দুই দুটি ফাইনাল খেলার কারণে যেভাবে মোহামেডানকে নিয়ে জোয়ার তৈরি হয়েছিল লিগের মঞ্চে সেটি ভাটায় পরিণত হচ্ছে। যতই ভালো খেলুক মোহামেডান, প্রতিপক্ষ দলের দিকে তাকালে মোহামেডান কোচ, ম্যানেজার অথবা যারা সংশ্লিষ্ট রয়েছেন তারা ট্রফি দৌড়ের কথা বলতে পারছেন না। মোহামেডানের সমস্যার শেষ নেই।

নিজেদের জমি থাকলেও অনুশীলনের জন্য নিজেদের মাঠ নেই, খেলোয়াড় তৈরি পরিকল্পরা নেই, ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নেই, পেশাদার লিগে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পরিকল্পনা নেই ৮৭ বছরের পুরনো ক্লাবটির, অনূর্ধ্ব-১৮ ফুটবল ক্যাম্প থাকা দরকার সেটি নেই, ক্লাব টেন্টে খেলোয়াড়দের জন্য সুযোগ সুবিধা নেই, দেশি-বিদেশি ফুটবলাররা একই ছাদের নিচে থাকতে পারছেন না, বিদেশিরা থাকেন গুলশানে, দেশি ফুটবলাররা ক্লাবে, ফলে প্রয়োজনের সময় সবাইকে একসঙ্গে পাওয়া যায় না, অনুশীলনের সময় দেখা হয়। দুটা ফাইনালের উত্তেজনা জীর্ণ কাঠামোয় পরিবর্তন আসেনি। এখনো নানা সমস্যায় জর্জরিত। সাদাকালো কোটি কোটি সমর্থক মুখিয়ে, পেশাদার লিগে কবে চ্যাম্পিয়ন হবে মোহামেডান? এর উত্তর কারো জানা নেই। ক্লাবের কেউ জানে না।

মোহামেডান ফুটবল দলটি এখন মূলত পরিচালিত হয় ক্লাব সভাপতি জেনারেল মোহাম্মদ আবদুল মুবীন (অব.) এবং ইঞ্জিনিয়ার গোলাম মোহাম্মদ আলমগীরের আগ্রহে। তারা সহযোগিতা করছেন। এত বড় বড় কর্মকর্তার ভিড়ে এক-দুই জন দিয়ে ফুটবল দল পরিচালনা কঠিন মনে করছেন দলের ম্যানেজার ইমতিয়াজ আহমেদ নকীব। তিনি মনে করেন, শিরোপা জয়ের টার্গেট করতে হলে আরও শক্তিশালী দল গঠন করতে হবে। আরও কিছু বিষয়ে পরিবর্তন আনার গুরুত্ব দিতে হবে। নকীব বলেন, ‘আমাদের সভাপতি মুবীন সাহেব আছেন, আলমগীর সাহেব আছেন, ওঁরা সহযোগিতা করছেন। তবে অন্যান্য কর্মকর্তা যারা আছেন সবাই যদি এগিয়ে আসনে তাহলে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার টার্গেট করা যায়। কোনো ক্লাব যদি ৪০ কোটি টাকা খরচ করে দল বানায় আমরা এর অর্ধেক টাকায় চ্যাম্পিয়ন দল বানাতে পারব।’

কপিরাইট © বিডি নিউজ লাইভ ৯৯ ডট কম ২০২৪ । সর্বসত্ব সংরক্ষিত।