নিউজ ডেস্ক
জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে পরদিন সকালেই মাগুরা থেকে ঢাকায় এসেছেন সাকিব আল হাসান। এসে আবার শেরে বাংলায় জোর অনুশীলন। কেউ কেউ ভেবেছিলেন, সেটা বুঝি একদিনের জন্য, হয়তো পরদিনই মাগুরা ফিরে যেতে পারেন সাকিব। তবে তার গুরু, মেন্টর ও টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজার নাজমুল আবেদিন ফাহিম গতকাল সোমবারই জানিয়েছিলেন, সাকিব কালও (আজ মঙ্গলবার) প্র্যাকটিস করবে। করেছেনও। মঙ্গলবার সাকিবকে দেখা গেল বসুন্ধরা স্পোর্টস কমপ্লেক্সে রংপুর রাইডার্সের প্র্যাকটিসে।
আগেরবার বিপিএলে ফরচুন বরিশালের হয়ে খেলা সাকিবের এবার নতুন ঠিকানা বসুন্ধরার মালিকানাধীন রংপুর রাইডার্স। এখন ক্রিকেটার, জাতীয় দলের অধিনায়কের পাশাপাশি নামের আগে জাতীয় সংসদ সদস্যের তকমা। তবে আলাদা নয়, মঙ্গলবার প্র্যাকটিসের পর মিডিয়ার সামনে সেই চিরচেনা সাকিবকেই দেখা গেলো। উপস্থিত সাংবাদিকদের মধ্য থেকে প্রশ্ন করা হলো, এমপি সাকিব নাকি ক্যাপ্টেন সাকিব? কোন নামে ডাকলে আপনি খুশি? সাকিবের উত্তর, ‘যা ইচ্ছা ডাকেন, সমস্যা নেই।’ পরের প্রশ্ন, ‘এমপি সাকিব ও আজকের (ক্রিকেটার) পার্থক্যটা কী?’ সাকিবের হাসিমাখা উত্তর, ‘জানি না তো!’ এতদিনের পরিশ্রমের পর ওদিন রাতেই চলে আসা, মাঠে ফেরা কীভাবে সম্ভব হলো? সাকিবের উল্টো প্রশ্ন, ‘কেমনে সম্ভব মানে কী? (হাসি)। বিপিএল শুরু হচ্ছে। প্রস্তুতি নিতে হবে। প্রায় আড়াই মাসের মতো হয়েছে মাঠের বাইরে। কোনো ফিটনেসের কাজ করতে পারিনি, স্কিলের কাজ করতে পারিনি।
স্বাভাবিকভাবেই তৈরি হওয়ার জন্য সময় লাগবে। এজন্য আর সময় নষ্ট করতে চাইনি।’ বিশ্বকাপের মধ্যে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে শেষ ম্যাচের আগে থেকে মাঠের বাইরে। তারপর নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে হোম অ্যান্ড অ্যাওয়েতেও খেলতে পারেননি। এ সময়টায় মাঠের ক্রিকেট মিস করেছেন? বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারের জবাব, ‘নাহ, ইনজুরিতে ছিলাম। তাই মিস করার কোনো সুযোগ ছিল না। মানে আমি ফিট থাকলেও তো খেলতে পারতাম না। ইনজুরিতে যেহেতু ছিলাম। মিস করার সুযোগ আসেনি সেভাবে।’ ইনজুরির কী অবস্থা? সাকিব জানালেন, ‘অনুশীলন শুরু করেছি। আরও কিছুদিন সময় লাগবে। বোলিং আঙুল যেহেতু, স্বাভাবিকভাবেই সময় লাগবে।
তবে উন্নতি হচ্ছে ভালোই।’ রংপুর রাইডার্স নিয়ে প্রত্যাশা কী? সাকিবের আত্মবিশ্বাসী উত্তর, ‘চ্যাম্পিয়ন ছাড়া রংপুর রাইডার্স কি অন্য কোনো চিন্তা করেছে? স্বাভাবিকভাবেই তাদের দলটা ভালো আছে। আমার মনে হয়, ভারসাম্যপূর্ণ দল। একইসঙ্গে অন্যান্য দলও শক্তিশালী। যেহেতু রংপুর রাইডার্স প্রতি বছরই চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য দল করে থাকে, এ বছরও তাদের সেটাই লক্ষ্য থাকবে।’ রংপুর রাইডার্সের অধিনায়কত্ব করবেন কিনা, এখনো নিশ্চিত না। অধিনায়কত্ব প্রসঙ্গে সাকিবের ব্যাখ্যা, ‘এটা তো রংপুর রাইডার্স (ফ্র্যাঞ্চাইজি) সিদ্ধান্ত দেবে। তাদের জিজ্ঞেস করলে উত্তর পাবেন। আমার মতামতের ওপর কিছু নির্ভর করে না। একটা ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টে সবসময় মালিকদের ওপর নির্ভর করে তারা কাকে চায়, কীভাবে চায়। সেভাবেই সবকিছু পরিকল্পনা করে।’ জাতীয় দলের অধিনায়কত্ব প্রসঙ্গ আসতেই সাকিব বলে দিলেন, জাতীয় দলের ক্যাপ্টেন্সি নিয়ে বোর্ড শীর্ষ কর্তাদের সাথে বসে তার মতামত দেবেন। এগুলো নিয়ে এখনও কথা হয়নি। তিনি বলেন, ‘বোর্ডের সঙ্গে কথা হবে। তখন আলোচনা হবে। এরপর সবাই মিলে যেটা ভালো মনে করবে, সেটাই সিদ্ধান্ত নেবে। আর এই প্রশ্নের উত্তর আমি মোটামুটি ৮-১০ বার দিয়েছি।’ আগামী জুনে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। নিজ দলের কাছে প্রত্যাশা কী? সাকিব জানালেন, ‘প্রতিবারই তো বেশি প্রত্যাশা থাকে। এবারও তাই থাকবে।
যেহেতু টি-টোয়েন্টি সংস্করণ, আমরা শেষ এক বছর আমরা খুব ভালো খেলেছি। দলটা এখন ভারসাম্যপূর্ণ আছে, ছন্দেও আছে। সবাই ভালো খেলছে। নিউজিল্যান্ডেও ভালো খেলেছে। প্রত্যাশা তো বেশি থাকবেই। খেলা হবে যুক্তরাষ্ট্র ও ওয়েস্ট ইন্ডিজে। যেখানে হয়তো আমাদের ক্রিকেটটা বেশি মানানসই হবে। তো আমাদের সুযোগ আছে।’ সবশেষে উঠলো এমপি ও ক্রিকেটার, একসঙ্গে কতটা চ্যালেঞ্জিং? সাকিবের নিজের মত করে জবাব, ‘যতটুকু চ্যালেঞ্জিং হওয়া দরকার, ততটুকু চ্যালেঞ্জিং। এর চেয়ে বেশি আর কী হবে?’