মায়ের হাতে শীতের পিঠা খাওয়া হলো না ঢাবি ছাত্রী জয়নবের

নিউজ ডেস্ক


কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার মণ্ডলপাড়া গ্রামের বাড়িতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী জয়নবের লাশ আশা মাত্রই এক নজর দেখার জন্য মানুষের ঢল নামে এবং কান্নার রোল পড়ে যায়। এ সময় তার বাবা-মা আহাজারি করে বলেন ‘আহারে আমার মাকে শীতের পিঠা খাওয়াতে পারলাম না’। আমাদের আশা ছিল মেয়েটি শিক্ষিত হয়ে বড় চাকরি করে বড় অফিসার হবে কিন্তু আল্লাহ আমাদের স্বপ্ন-আশা ভেঙে চুরমার করে দিল।জয়নবের লাশ রবিবার (২১ জানুয়ারি) বিকাল ২টার দিকে রৌমারী কেরামতিয়া আদর্শ ফাযিল মাদরাসায় নামাজে জানাজা শেষে কেন্দ্রীয় কবর স্থানে দাফন করা হয়।জয়নবের বাবা আব্দুল জলিল পেশায় একজন কাঠমিস্ত্রী। মা মোছা. জামিলা খাতুন একজন গৃহিণী। তারা দুই ভাই এক বোন, জয়বন ছিল সবচেয়ে ছোট। সে সিজিজামান উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি এবং রৌমারী ডিগ্রি কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন।

মেধাবী জয়নবের ইচ্ছার পরিপ্রেক্ষিতে একপর্যায়ে অনেক দুঃখ-কষ্ট ও ধারদেনা করে পরিবারের লোকজন তাকে ঢাকা বিশ্বিবিদ্যালয়ে ভর্তি করান। আমাদের আশা ছিল মেয়েটি শিক্ষিত হয়ে বড় চাকরি করে বড় অফিসার হবে এবং সংসারের দুঃখ-কষ্ট দূর হবে। কিন্তু আল্লাহ আমাদের স্বপ্ন-আশা ভেঙে চুরমার করে দিল। জয়নব খাতুন একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) অপরাধ বিজ্ঞান বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।

তিনি থাকতেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে। পড়ালেখার পাশাপাশি জয়নব ছিলেন সহশিক্ষা কার্যক্রমে সরব। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় রেঞ্জার ইউনিটের সদস্য, হিমু পরিবহনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং ভ্রমণ কন্যার সদস্য ছিলেন। এ ছাড়াও ভ্রমণ কন্যা-ট্রাভেলস অব বাংলাদেশের সেরা ভলানটিয়ার এবং মুভার’স একটি সচেতনতামূলক সংগঠন যার শুভেচ্ছা দূত হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।

উল্লেখ্য, গত শনিবার সকাল ৮টার দিকে বান্দরবন জেলা সদর থেকে ফেরার পথে রুমা উপজেলায় বগালেক-কেওক্রাডং সড়কের দার্জিলিংপাড়ায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। এতে ঘটনাস্থলে ঢাবি ছাত্রী জয়নব মারা যান। আহত হন আরো ১২ জন।

কপিরাইট © বিডি নিউজ লাইভ ৯৯ ডট কম ২০২৪ । সর্বসত্ব সংরক্ষিত।