নিউজ ডেস্ক
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ী স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যদের সঙ্গে আজ রোববার বৈঠক করতে যাচ্ছেন সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আজ সন্ধ্যায় স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যদের প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। সংসদে নিজেদের ভূমিকা কী হবে, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে গণভবনের এই বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনার দিকনির্দেশনার অপেক্ষায় আছেন স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যরা। দ্বাদশ জাতীয় সংসদে স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য আছেন ৬২ জন। এর মধ্যে ৫৮ জনই আওয়ামী লীগের নেতা।
আওয়ামী লীগের সূত্র জানায়, সংসদে স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য, বিশেষ করে দলীয় নেতা যাঁরা স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন, তাঁদের ভূমিকা কী হবে, তাঁদের পাওয়া আসনের বিপরীতে সংরক্ষিত নারী আসন কীভাবে বা কাদের বণ্টন করা হবে, এসব বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী দিকনির্দেশনা দিতে পারেন। স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যদের অনেকে বলছেন, তাঁদের বেশির ভাগই প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ অনুযায়ী সংসদে ভূমিকা রাখতে চান। অন্যদিকে আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকদের কেউ কেউ বলছেন, দলে যুক্ত না হয়ে তাঁরা স্বতন্ত্র সদস্য হিসেবেই ভূমিকা রাখবেন, দলে এই আলোচনা রয়েছে।
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে ২২৩টি আসনে জয়লাভ করে সরকার গঠন করেছে আওয়ামী লীগ। তাদের পর সবচেয়ে বেশি ৬২টি আসনে জয় পেয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। আর একাদশ সংসদের প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টি পেয়েছে ১১টি আসন। ফলে এবার প্রধান বিরোধী দল কারা হবে, তা নিয়ে অস্পষ্টতা তৈরি হয়।
অবশ্য আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ইতিমধ্যে বলেছেন, জাতীয় পার্টিই বিরোধী দলের আসনে বসতে যাচ্ছে। জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত নারী আসন বণ্টন করা হয় সংখ্যানুপাতিক হারে। ৬২ জন স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য সবাই মিলে যদি স্বতন্ত্র জোট করে নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দেন, তাহলে তাঁরা মোট ১০টি সংরক্ষিত আসন পাবেন। আবার ছয়জন মিলে জোট করে একটি করে আসনও তাঁরা নিতে পারেন বা সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী কোনো দলের সঙ্গেও জোট করতে পারেন।
নির্বাচন কমিশন সূত্র জানায়, সংরক্ষিত নারী আসনের বিষয়ে অবস্থান জানতে চেয়ে স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যদের ইতিমধ্যে চিঠি দেওয়া হয়েছে। আইন অনুযায়ী, সাধারণ নির্বাচনের ফলাফলের গেজেট প্রকাশিত হওয়ার ২১ কার্যদিবসের (৬ ফেব্রুয়ারি) মধ্যে জোট গঠনের বিষয়টি জানাতে হবে। এ সময়ের মধ্যে কোনো স্বতন্ত্র সদস্য কোনো জোটে না গেলে তাঁদের নিয়ে আলাদা স্বতন্ত্র জোট গঠন করা হয়েছে বলে গণ্য হবে।
তবে একাধিক স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য জানিয়েছেন, তাঁরা এখন পর্যন্ত নিজেদের মধ্যে এসব বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো আলোচনা করেননি। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের আগে নিজেরা কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার মতো বাস্তবতা নেই বলেও মনে করেন কেউ কেউ। আজকের বৈঠকে দলীয় প্রধান জানতে চাইলে স্বতন্ত্ররা নিজ নিজ অবস্থান থেকে বক্তব্য তুলে ধরবেন।
তবে তাঁরা মূলত অপেক্ষা করছেন, প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত বা নির্দেশনার জন্য। আজ গণভবনের বৈঠক থেকে সে নির্দেশনা পাওয়া যেতে পারে। প্রয়োজন হলে এরপর তাঁরা নিজেদের মধ্যে বৈঠক করবেন।