নিউজ ডেস্ক
প্রশ্নটা উঠেছে টেস্টে স্টিভ স্মিথের ওপেনিংয়ে নামা নিয়ে আলোচনার শুরুতেই—এই পজিশনে ঠিক কতটা কার্যকর হবেন স্টিভ স্মিথ? ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ দিয়ে তাঁর নতুন ভূমিকায় ব্যাটিংয়ে নামার শুরু। অ্যাডিলেড টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার দুই ইনিংসে ১২ ও অপরাজিত ১১ দিয়ে স্মিথের ওপেনিং-যাত্রার শুরু। এর মধ্যে দ্বিতীয় ইনিংসে তাঁর অপরাজিত ১১-কে বিচারের সুযোগ নেই। কারণ, অস্ট্রেলিয়া জয়ের জন্য লক্ষ্যই পেয়েছিল ২৬। কিন্তু ব্রিসবেনে অস্ট্রেলিয়ার প্রথম ইনিংসে ৬ রানে আউট হওয়ার পর প্রশ্নটা উঠেছে জোরেশোরে। কেউ কেউ তো বলেই বসেন, টেস্টে স্মিথের ওপেন করা অনুচিত। সমালোচনার জবাব কীভাবে দিতে হয়, সেটাও স্মিথের জানা।
ব্রিসবেন টেস্টেই অস্ট্রেলিয়ার দ্বিতীয় ইনিংসে সেটি দেখা গেছে। আরেকটু হলে অস্ট্রেলিয়াকে জিতিয়েই দিতেন! ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে ৮ রানে হারের সেই ম্যাচে ১৪৬ বলে ৯১ রানে এক প্রান্ত ধরে রেখেছিলেন স্মিথ। অস্ট্রেলিয়া জিততে না পারলেও ওপেনার স্মিথকে নিয়ে সমালোচকদের মুখ একটু হলেও বন্ধ হয়েছে। ১০৭ টেস্টে ৫৮.০৪ গড়ে ৯৬৩৪ রান স্মিথের। ৩২টি টেস্ট শতকের মধ্যে ২৭টিই করেছেন তিন ও চারে নেমে। স্মিথ দাবি করেছেন, ওপেনিংয়ে নামা নিয়ে তিনি বেশি ভাবেননি। এই পজিশনে ‘স্বস্তি’ বোধ করছেন বলেই জানিয়েছেন ৩৪ বছর বয়সী এ ব্যাটসম্যান। মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে (এমসিজি) আজ সংবাদকর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন স্মিথ, ‘দুটি অথবা তিনটি ইনিংসে ব্যর্থ হওয়ার পর অনেক কথা হয়েছে—কিন্তু আমি একবার নট আউট থেকেছি এবং দুবার অল্প রান করেছি।’ স্মিথ এরপর বলেছেন, ‘ওপেনার হিসেবে আমার গড় এখন ৬০।’ তাঁর দাবিটা মিথ্যা নয়। পরিসংখ্যান বলছে, ২ টেস্টে ওপেন করে মোট ৪ ইনিংসের মধ্যে ২ বার অপরাজিত থেকে মোট ১২০ রান করা স্মিথের ব্যাটিং গড় ৬০।
ওপেনিংয়ে নামাটা যে তাঁর কোনো অসুবিধা করছে না এবং এই পজিশনে ব্যাটিং নিয়ে যে তিনি বেশি ভাবছেন না, সেটাও বুঝিয়ে দিয়েছেন স্মিথ, ‘এটা স্রেফ একটা পজিশন। নতুন বলে এর আগে অনেকবার ব্যাটিং করেছি, সেটা আগেভাগে নামার জন্য। (এই পজিশনে) কয়েক সপ্তাহ উপভোগ করেছি...যদি তারা মনে করে আমাকে নিচে নামাতে হবে, দলের জন্য যা যা দরকার আমি সবই করতে প্রস্তুত।’ ব্রিসবেন টেস্টের অপরাজিত ইনিংসটির মাধ্যমে ২০১১ সালে ওয়ার্নারের পর প্রথম অস্ট্রেলিয়ান হিসেবে ‘ক্যারিং দ্য ব্যাট থ্রু আউট ইনিংস’-এর কীর্তি গড়েন স্মিথ। সে ইনিংসে ৭ উইকেট নেওয়া ক্যারিবীয় পেসার শামার জোসেফকে একমাত্র স্মিথই ভালোভাবে সামলেছেন। অভিষেক সিরিজেই আলো ছড়ানো এই ডানহাতি পেসারের বিরল প্রতিভা মনে হয়েছে স্মিথের, ‘(মাঠে থাকতে) একটি আলোচনা কানে এসেছিল। সম্ভবত সেটা মধ্যাহ্নভোজন বিরতির আগে তখন আমাদের ৭ উইকেট পড়ে গেছে। সে ওয়েস্ট ইন্ডিজ অধিনায়ক ক্রেগ ব্রাফেটকে বলছিল, আমি শেষ পর্যন্ত বোলিং করব। সে বিরল প্রতিভা এবং আমি মনে করি সে যা করতে পারে, তা ক্রিকেটের জন্যই ভালো। আর ওয়েস্ট ইন্ডিজও একসময় যেমন পারফর্ম করত, তেমনই খেলেছে। সে শুরুর চেয়ে শেষ দিকে বেশি জোরে বোলিং করেছে।’ ব্রিসবেনে জশ হ্যাজলউডকে আউট করে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে স্মরণীয় জয় এনে দেন জোসেফ। সে ওভারে হ্যাজলউডকে দিয়ে কেন স্মিথ দুটি বল খেলালেন, তার ব্যাখ্যাও দিয়েছেন এই ব্যাটসম্যান, ‘আমরা ভিন্ন কিছু করতে পারতাম কি না, সেটা নিয়ে আমি ভেবেছি।
হয়তো শামারের ৫টি বল আমি খেলতে পারতাম। কিন্তু শেষ বলে রানটা নিতে পারব কি না, এই দুশ্চিন্তাও ভর করেছিল। তখন হ্যাজলউডকে আলজারির (পরের ওভারে) ৬টি বল মোকাবিলা করতে হতো।’ ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের প্রস্তুতি নিচ্ছে অস্ট্রেলিয়া। স্মিথের অধিনায়কত্বে এই সিরিজটি খেলবে অস্ট্রেলিয়া, যা শুরু হবে শুক্রবার।