রাজশাহীতে অনুষ্ঠিত হলো জাতীয় শিশু চিত্রকলা প্রদর্শনী

শাহিনুর রহমান সোনা,রাজশাহী

শিশুরা থাকুক হাসিতে, শিশুরা থাকুক খুশিতে স্লোগানে সারা দেশের অংশগ্রহণকারীদের আঁকা ছবির মধ্য থেকে বাছাইকৃত সেরা বিজয়ী ও নির্বাচিত ১০০টি ছবি নিয়ে রাজশাহীতে অনুষ্ঠিত হলো ২য় জাতীয় শিশু চিত্রকলা প্রদর্শনী। 


শুক্রবার (২ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০ টায় বাংলাদেশ শিশু একাডেমির উদ্যোগে ও আয়োজনে রাজশাহী শিশু একাডেমির মুক্ত মঞ্চে উদ্বোধন করা হয় ২য় জাতীয় শিশু চিত্রকলা প্রদর্শনীর।  প্রদর্শনের আয়োজন করা হয় শিশু একাডেমির নিজস্ব মিলনায়তনে। 


প্রদর্শনীতে শিশুদের আঁকা ১৫টি সেরা বিজয়ী ছবি ও ৮৫টি নির্বাচিত  ছবি স্থান পায়। ছবি গুলোর মধ্যে  গ্রাম, নদী, ফসলের মাঠ, ফুল, পাখী, পরিবার, বিজ্ঞান, শিক্ষা, ধর্মীও উৎসব, বিয়ে বাড়ী, পহেলা বৈশাখ, গ্রামীন মেলা, ঝড়-বৃষ্টি, হাট-বাজার, গ্রামীন খেলাধুলা, মহান মুক্তিযুদ্ধ, ভাষা শহীদ, মেট্রোরেল, পদ্মা সেতু,  বীরশ্রেষ্ঠ, বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গবন্ধু কন্যার ডিজিটাল ও স্মার্ট বাংলাদেশ ইত্যাদি বিষয়গুলোর প্রাধান্য ছিল।  জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক  আশরাফুল ইসলামের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর গোলাম সাব্বির সাত্তার।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড রাজশাহীর চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. অলীউল আলম ও আরএমপি'র অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম এন্ড অপারেশনস) মোহাম্মদ হেমায়েতুল ইসলাম। বক্তব্য রাখেন শিশু একাডেমি ঢাকার প্রোগ্রাম অফিসার লায়লা আরজুমান বানু ও সেরা বিজয়ী শিশুদের একজন সিরাজগঞ্জের মুশফিয়াত মাহাদিয়াত সদ্যশী। স্বাগত বক্তব্য রাখেন রাজশাহী'র জেলা শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা মনজুর কাদের।

বিশেষ অতিথি অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ হেমায়েতুল ইসলাম বলেন, 'ছবি নিজেই কথা বলে'। আমাদের ছোট্ট সোনামনিরা যে এত সুন্দর সুন্দর ছবি এঁকেছে, আমরা বিমোহিত এবং বিমুগ্ধ। এগুলোই আগামী স্মার্ট বাংলাদেশের দৃষ্টান্ত, এখন আমাদের সামনে। আজকের শিশু আগামীর কর্ণধার। শিশুদের এই  উৎসাহ উদ্দীপনা দেশকে আরও এগিয়ে নেবে, জাগিয়ে তুলবে ; একদিন বাংলাদেশ বিশ্বের বুকে জয়ী হবে, আমরা জয়ী হবো।

বিশেষ অতিথি রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. অলীউল আলম বলেন, দেখবো সোনার বাংলাদেশ, আঁকবো সোনার বাংলাদেশ, ভালবাসবো সোনার বাংলাদেশকে। ছবিগুলোতে এমনই দেখতে পেলাম। দেশকে ভালবাসা দিয়ে বিচার করবো আমরা। শুধু জিপিএ, গোল্ডেন চাই না আমরা, দেশকে ভালবাসবে, দেশকে ভুলবে না, মাকে ভুলবে না, দেশের মাটিকে ভুলবে না এমন শিশুই চাই আমরা। স্মার্ট শিক্ষা, স্মার্ট দেশ শেখ হাসিনার বাংলাদেশ। শিক্ষার বিকল্প কিছু হতে পারে না, সুশিক্ষায় শিক্ষত হয়ে এগিয়ে যেতে হবে, এগিয়ে নিতে হবে দেশকে। মোবাইল আসক্তি কমাতে হবে, নিয়ন্ত্রিত থাকতে হবে, সব আঁকিবুকির মাঝেই যেন আমার মা থাকে, খেটে খাওয়া বাবা থাকে, দেশ থাকে, দেশের স্বাধীনতা থাকে। কবি চানক্যের উক্তিতে তিনি বলেন, রাজা হও কিন্তু জ্ঞানী হতে হবে, কারণ রাজা নিজের ভুখন্ডে পুজিত হন, জ্ঞানীরা সবখানে পুজিত হন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রখ্যাত ভূ-বিজ্ঞানী রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর গোলাম সাব্বির সাত্তার বলেন, আমাদের শিশুরা কত ভাল আঁকে, কত ভালো চিন্তা করে, তাদের মনের আকাশে কি বিচরন করে ছবিতেই তার অসাধারণ প্রতিফলন দেখতে পেয়েছি আমি। অমিত সম্ভাবনাময় অন্তরের অন্ধকার দূর করা শিক্ষা আজ সমাজ সংস্কৃতি সৃষ্টিকে ধারন করে বড় হচ্ছে। পরিবেশের সাথে খাপ খাইয়ে, পরিবেশের সাথে মানিয়ে, শীত গ্রীষ্ম সব কিছু সহ্য করে, সব রকমের সক্ষমতা নিয়ে এগিয়ে নিতে হবে শিশুদের। বাধা দিয়ে, বাধা অতিক্রম করতে শিখতে হবে তাদের। আমাদের শিশুরা এত সুন্দর ছবি আঁকে, আমি মুগ্ধ হয়েছি। আজকে যা দেখলাম, এটি নতুন পৃথিবী, বর্ণিলভাবে আগামী বিশ্বকে উপস্থাপন করেছে তারা। শিশুদের তাদের মত করে বাড়তে দিন, শুধু নজর রাখুন, বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। জয়ী হবে নিশ্চিত।

শীতের কুয়াশাঘেরা আনন্দমুখর এ অনুষ্ঠানে রাজশাহীর বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রায় পাঁচ শতাধিক শিশু উপস্থিত ছিল। উপস্থিত ছিলেন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনের একাংশ। আলোচনা সভা শেষে শিশু একাডেমি রাজশাহীর প্রশিক্ষণার্থীদের নিয়ে একটি মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়। সেখানে খুদে নৃত্য শিল্পীরা যুদ্ধ বন্ধের আহবান জানায়।

কপিরাইট © বিডি নিউজ লাইভ ৯৯ ডট কম ২০২৪ । সর্বসত্ব সংরক্ষিত।