ধর্ষণ করে ভিডিও অত:পর ব্ল্যাকমেইল করে মুক্তিপণ আদায় চক্রের ৪ সদস্য গ্রেপ্তার

শাহিনুর রহমান সোনা,রাজশাহী

মহানগরীর চন্দ্রিমা থেকে ধর্ষণকারী ও ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করে ব্লাকমেইল করে মুক্তিপণ আদায়কারী চক্রের মূলহোতা ও তার স্ত্রীসহ ৪ আসামীকে আটক করেছে র‌্যাব ; এছাড়া ভিকটিমকেও উদ্ধার করেছেন তারা।

শুক্রবার (৯ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১ টায় রাজশাহী র‌্যাব-৫ এর অধিনায়কের কার্যালয়ে এক সংবাদ বিজ্ঞাপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।

বৃহস্পতিবার(৮ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টায় রাজশাহী মহানগরীর চন্দ্রিমা থানার ভদ্রা মহল্লার পদ্মা আবাসিক এলাকার মোঃ সাব্বির সুলতানের পাঁচতলা বাড়ীর নিচ তলা থেকে বোয়ালিয়া থানার হেতম খাঁ সবজিপাড়ার নুরুল ইসলামের ছেলে আলমগীর ওরফে রয়েল (৪০), তার স্ত্রী হেলেনা খাতুন (৩০), নামা ভদ্রার নায়েব আলীর মেয়ে দিলারা বেগম (৩৫), উপর ভদ্রার আফজাল হোসের স্ত্রী মমতাজ বেগম (৪২) গ্রেফতার করা হয় এবং ভিকটিমকে উদ্ধার করা হয়। এসময় আলমগীর ওরফে রয়েলের কাছ থেকে ৩টি ১০০ টাকার নন-জুডিসিয়াল স্ট্যাম্প, ৫টি মোবাইল ফোন, ৪টি সীম, ৩টি চেক বই , হেলেনা খাতুনের ২টি পাসপোর্ট ২ উদ্ধার করা হয়।

র‌্যাব জানায়, ০৭ ফেব্রুয়ারি আনুমানিক দুপুর সাড়ে ১২ টায় ভিকটিম বাড়ী থেকে কেনাকাটার জন্য রাজশাহী কোর্টস্টেশন এলাকায় আসে। কেনাকাটার একপর্যায়ে ভিকটিম দেখতে পায় তার সঙ্গে থাকা মোবাইল ফোনটি হারিয়ে গেছে। ভিকটিম মোবাইল ফোনটি খোঁজা-খুঁজি করার সময় তার পূর্ব পরিচিত আটক ১নং আসামী জিজ্ঞাসা করে তার কোন কিছু হারিয়েছে কিনা, ভিকটিম বলেন, তার মোবাইল ফোনটি খুঁজে পাচ্ছে না। তখন আলমগীর রয়েল বেলা আনুমানিক ২ টার সময় তার মোবাইল ফোনটি পাইয়ে দেবে বলে একটি অটোতে উঠিয়ে রাজশাহী মহানগরীর চন্দ্রিমা থানার ভদ্রা এলাকায় নিয়ে যায় এবং সেখানে আটক অন্য তিনজনকে দেখতে পায়। পরে আলমগীর ভিকটিমকে অন্যান্য আসামীদের সহযোগিতায় জোর পূর্বক ধর্ষণ করে।

ধর্ষণের সময় অন্য তিন আসামীর সহযোগিতায় গোপনে ভিডিও ধারণ করা হয়। ধর্ষণ ও ভিডিও করা শেষে ভিকটিমকে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিও ছড়িয়ে দিয়ে সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন করার ভয় দেখিয়ে জোরকরে ৩টি ১০০ টাকার নন-জুডিসিয়াল ফাঁকা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিয়ে ৫ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবী করে আটকে রাখে।

আসামীদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, আটক আলমগীর রয়েল ভিকটিমের মোবাইল ফোন পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে অন্য আসামীদের সহযোগিতায় জোরপূর্বক ধর্ষণ করে এবং ভিডিও করে জোরপূর্বক স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিয়ে অন্যায়ভাবে লাভবান হওয়ার আশায় মুক্তিপণ বাবদ ৫ লক্ষ টাকা দাবী করে।

আলমগীর রয়েল একজন প্রতারক ও ব্লাকমেইলকারী। সে এবং তার স্ত্রী (২নং আসামী) ও শালিকাদ্বয় (৩ ও ৪নং আসামী) পরস্পর যোগসাজসে দীর্ঘদিন যাবত বিভিন্ন মহিলাদের ও পুরুষদের বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে ফুসলিয়ে, ভুল বুঝিয়ে উল্লিখিত ভাড়া বাড়ীতে সংগোপনে নিয়ে এসে জোরপূর্বক অনৈতিক কার্যকলাপের ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে বিভিন্ন স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিয়ে মোটা অঙ্কের মুক্তিপণ দাবী করে তাদের কাছে থেকে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে আত্মসাৎ করে আসছে। আসামী আলমগীর রয়েলের নামে ইতোপূর্বে নারী ও শিশু আইনে ১ টি মামলা আছে।

কপিরাইট © বিডি নিউজ লাইভ ৯৯ ডট কম ২০২৪ । সর্বসত্ব সংরক্ষিত।