৭ অভিযোগে ডিডি বাদশার অপসারণ, শিক্ষাবোর্ডে স্বস্তি

শাহিনুর রহমান সোনা,রাজশাহী

মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড রাজশাহীর উপপরিচালক (হিসাব ও নিরীক্ষা) বাদশাহ হোসেন ওরফে ডিডি বাদশার অপসারণে শিক্ষাবোর্ডের কর্মপরিবেশে স্বস্তি ফিরেছে। একই পদে দীর্ঘ ৮ বছর থেকে কয়েকগুন অবৈধ সম্পদের মালিক ডিডি বাদশা শিক্ষা বোর্ডের সব অনিয়ম ও দূর্ণীতির হোতা বলে কথিত আছে। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের একাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারি বলেন, দীর্ঘ ৮ বছর একই পদে থেকে অনিয়ম ও দূর্ণীতি করে ডিডি বাদশা গড়েছেন অবৈধ সম্পদের পাহাড়। শিক্ষা বোর্ডের বিগত সময়ের চেয়ারম্যান, সচিব সহ কর্মকর্তাদের মধ্যে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন বিভেদ তৈরি করে নিজের ফায়দা লুটেছেন সবসময়। কর্মকর্তা-কর্মচারিদের সাথে বারংবার দূর্ব্যবহার করতেন বরাবরই। এসমস্ত অন্যায় আর অনিয়মের বিরুদ্ধে কথা বললেই তার বিরুদ্ধে নেমে আসতো ভয়াবহ অত্যাচার। আমরা তার বিদায়ে খুশী।

তিনি চলে যাওয়ায় আমাদের শিক্ষা বোর্ডের কর্মপরিবেশ এসেছে স্বস্তি। জানা যায়, গতবছর ১৯ ডিসেম্বর শিক্ষা বোর্ডের বিভিন্ন কর্মকর্তাদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের শৃঙ্খলা বিষয়ক শাখার উপসচিব শাহীনুর ইসলাম স্বাক্ষরিত এক শোকজ লেটারে ( কারণ দর্শাও নোটিশ) তার বিরুদ্ধে ওঠা ৭টি অভিযোগের জবাব চাওয়া হয়।


অভিযোগগুলো হচ্ছে:১) বিভিন্ন ধরনের কৌশল অবলম্বন করে সকল প্রকার কাজে চেয়ারম্যান ও সচিবকে অসহযোগিতা করে বোর্ডের সার্বিক কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত করা,

২) ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আদেশ অবহেলা, তুচ্ছ তাচ্ছিল্য ও দায়িত্ব পালনে অনীহা, সহকর্মীদের সাথে দুর্ব্যবহার করা,

<৩) মৃত কর্মচারী মো: আব্দুল মতিন, এর নথিপত্র সরবরাহকারী পেনশনের উত্তরাধিকারী ছেলেকে তার প্রাপ্য বিভিন্ন উৎসবভাতা প্রদান না করে উপপরিচালক (হিসাব ও নিরীক্ষা) অনেক দিন যাবৎ হয়রানি করা এবং উৎকোচ দাবী করা,

৪) বোর্ডের স্থায়ী কর্মকর্তা ও প্রেষণে নিয়োজিত কর্মকর্তার মধ্যে বিভেদ তৈরিতে সর্বদা নিজেকে নিয়োজিত রাখা,

৫) প্রাক্তন চেয়ারম্যান থাকাকালীন সময়ে অর্থ সংক্রান্ত গোপনীয় কাগজপত্র অফিসের বাইরে গোপনে সরবরাহ করে প্রেষণে নিয়োজিত কর্মকর্তা ও বোর্ডের কর্মকর্তাদের মধ্যে কৌশলে বিবাদ সৃষ্টি করা,

৬) বোর্ডের আর্থিক ব্যাপারে কোনো পরামর্শ চাইলে ভুল ব্যাখ্যা দেয়া এবং বিভিন্ন ব্যাপারে সত্যকে আড়াল করে ইচ্ছাকৃত মনগড়া ব্যাখ্যা প্রদান করা,

৭) রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের ০৫ (পাঁচ) জন চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীর এবং কয়েকজন তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারীর ২০২১-২০২২ অর্থ বছর (কর বছর ২০২২-২০২৩) আয়কর বাবদ অতিরিক্ত ১,১৩,৩৩০/- (এক লক্ষ তের হাজার তিনশত ত্রিশ) টাকা কর্তন করে সরকারি কোষাগারে জমা প্রদান করা।

এ ব্যাপারে সচিব, রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড তাতে সংশ্লিষ্ট কর্মচারীদের টাকা ফেরত বা সমন্বয় করার জন্য আদেশ দিলেও অদ্যাবধি সেই আদশ পালন না করা এবং এ ধরনের অর্থ সংক্রান্ত কাজে অবহেলা, গাফিলতি ও উদসীনতা দেখানো।

মূলত এসব অভিযোগের প্রেক্ষিতেই গত ১১ ফেব্রুয়ারি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক আদেশে ডিডি বাদশা হোসেনকে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের উপপরিচালক (হিসাব ও নিরীক্ষা) পদ থেকে প্রেষণ প্রত্যাহার করে নওগাঁ জেলার নজিপুর ডিগ্রি কলেজে অর্থনীতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক পদে বদলি করা হয়।

কপিরাইট © বিডি নিউজ লাইভ ৯৯ ডট কম ২০২৪ । সর্বসত্ব সংরক্ষিত।