নিউজ ডেস্ক
ট্রফি হাতে বাধভাঙ্গা উল্লাস হতে পারতো ৮ ফেব্রুয়ারি ফাইনালের পরই। ওই দিন কমলাপুর বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে সাফ অনূর্ধ্ব-১৯ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে মহানাটকের পর ক্রীড়ামন্ত্রীর হাত থেকে ট্রফি গ্রহণ করে বাংলাদেশের মেয়েরা আনন্দ করলেও তাতে ঘাটতি ছিল। ছিল প্রাণহীন।
কারণ, ট্রফিতো বাংলাদেশেরই পাওয়ার কথা ছিল। বাংলাদেশ ও ভারতের অধিনায়কের গ্রহণ করা ট্রফি দিয়ে দেওয়া হয় অতিথি দলকে। তখনই সাফ থেকে বলা হয়েছিল, বাংলাদেশকে আরেকটি ট্রফি দেওয়া হবে। অবশেষ ১০ দিন পর রোববার সেই ট্রফি বুঝে পেলো আফঈদা-সাগরিকারা। সাফের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুল হক হেলাল বাফুফে ভবনের সামনে মাঠে আনুষ্ঠানিকভাবে ট্রফি তুলে দিয়েছেন চ্যাম্পিয়ন মেয়েদের হাতে। এই টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় আসরের সেরা খেলোয়াড় হয়েছেন বাংলাদেশের সাগরিকা। পেয়েছেন সর্বাধিক গোলদাতার পুরস্কারও। এক কথায় যুবতীদের এই সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের সব আলো কেড়ে নিয়েছেন ঠাকুরগাঁয়ের এই মেয়ে।
সাগরিকাময়ই হয়ে থাকলো মহানাটকে ভরা এই টুর্নামেন্ট। টুর্নামেন্টে তিন ম্যাচ খেলে ৪ গোল করেছেন সাগরিকা। তার সমান গোল করেছেন ভারতের পুজা ও শিবানি দেবি। তিনজন যৌথভাবে সর্বাধিক গোলদাতা হয়েছেন। প্রথম ম্যাচে নেপালের বিপক্ষে ৩-১ ব্যবধানে জেতা ম্যাচে জোড়া গোল করেছিলেন সাগরিকা। এরপর রাউন্ড রবিন লিগে ভারতকে ১-০ তে হারানো গোলটিও তার। ফাইনালে ভারত যখন ১-০ গোলে জয়ের কাছাকাছি চলে গিয়েছিল, ঠিক তখন ৯২ মিনিটে ম্যাচে সমতা ফিরিয়ে এনেছিলেন সাগরিকা। গত ৮ ফেব্রুয়ারি ফাইনালের নির্ধারিত সময়ের খেলা ১-১ সমতায় শেষ হলে ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে। দুই দলই পাঁচ শটের সবগুলো গোল করে। সাডেন ডেথেও দুই দলের ৬ জন করে লক্ষ্যভেদ করেন। তারপরই নিয়ম ভেঙ্গে ম্যাচ কমিশনার ডি সিলভা জয়াসুরিয়া রেফারিকে ডেকে নিয়ে টসের মাধ্যমে শিরোপা নিষ্পত্তির সিদ্ধান্ত দেন। টসে ভারত জিতে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার উদযাপন শুরু করলে আপত্তি জানায় বাংলাদেশ। পরে অনেক আলোচনার পর যৌথভাবে দুই দলকে চ্যাম্পিয়ন ঘোষণার সিদ্ধান্ত নেয় সাফ। ট্রফি বুঝে পাওয়ার পাশাপাশি সেরা খেলোয়াড় ও সর্বাধিক গোলদাতার পুরস্কার পেয়ে অনেক খুশি সাগরিকা। ১০ দিন পর এমন পুরস্কার পাবেন জানতেনই না এই উঠতি ফরোয়ার্ড।
পুরস্কার জেতার পর তাৎক্ষণিকভাবে প্রতিক্রিয়ায় সাগরিকা বলেন, ‘আজই(রোববার) সুখবরটি জেনেছি। সকালে জেনেছি, আমি সর্বাধিক গোলাদাতা হওয়ার পাশাপাশি সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কারেও মনোনীত হয়েছি। বাবা-মা আগে খবরে দেখেছিলেন। তবে তারা আমাকে কিছু বলেননি। জেনেছি সকালে। অনূর্ধ্ব-১৯ এটাই আমার প্রথম টুর্নামেন্ট। দুটি পুরস্কার পেয়ে অনেক ভালো লাগছে।’