নিউজ ডেস্ক
নাভা ও নোভার জন্য মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) দিনটি আনন্দের। কারণ এদিন তারা এক দুঃসহ যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেয়েছেন। জটিল এক অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে আলাদা করা হয়েছে জোড়া মেরুদণ্ডের এই দুই শিশুকে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) টানা ১৩ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে তাদের অস্ত্রোপচার চলে। শেষ পর্যন্ত এই অস্ত্রোপচার সফল হয় বলে জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন। তিনি বলেন, এই অপারেশন করতে দেশের বাইরে গেলে এক কোটি টাকা লাগতো, কিন্তু বাংলাদেশে এটি করা হয়েছে বিনামূল্যে। মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বিএসএমএমইউতে কেবিন ব্লকের ১০ তলায় শিশু নাভা ও নোভাকে দেখতে গিয়ে এসব কথা বলেন মন্ত্রী।
তিনি বলেন, আজ বিএসএমএমইউতে নাভা ও নোভা নামের দুই শিশুর জোড়া মেরুদণ্ড আলাদা করার অপারেশন সাকসেসফুল হলো। এটি সাধারণ কোনো কাজ নয়। এখানে আমাদের অভিজ্ঞ বড় একটি চিকিৎসক টিম একটানা ১৩ ঘণ্টার বেশি সময় অপারেশন করে এই অসাধ্য কাজ সাধন করেছেন। এই অপারেশন ভারত বা বাইরের দেশে করতে গেলে প্রায় এক কোটি টাকা খরচ হতো। কিন্তু বাংলাদেশে এই দুই অবুঝ শিশুর চিকিৎসা ব্যয় প্রধানমন্ত্রী নিজে বহন করেছেন। স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী নিজে আমাকে এখানে আসতে বলেছেন। এর আগেও বাংলাদেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় আমরাই মাথা জোড়া লাগা শিশুর সফল অপারেশন করেছি। সুযোগ পেলে আমরা যে আসলেই পারি, এগুলো কাজ হচ্ছে তারই প্রমাণ। চিকিৎসাক্ষেত্রেও আমরা দিন দিন এগিয়ে যাচ্ছি। আমি বলতে পারি, দায়িত্ব নিয়ে আমরা চিকিৎসা দিলে বাংলাদেশ থেকে এখন জটিল সব রোগেরই চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব। ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, চিকিৎসা ক্ষেত্রে বাংলাদেশ একটি অপার সম্ভাবনার দেশ।
আমাদের দেশে প্রচুর শিক্ষার্থী প্রতিবছর মেডিকেল পড়ালেখা শেষ করে চিকিৎসক হচ্ছেন। আমাদের চিকিৎসকরা যেমন মেধাবী তেমন দক্ষ। শুধু একটু সুযোগ-সুবিধা বাড়াতে হবে। তাদের দায়িত্ব অনুযায়ী ভরসা দিয়ে আত্মবিশ্বাস নিয়ে কাজ করার সুযোগ দিতে হবে। তাহলে বাংলাদেশ থেকে কোনো রোগীকে আর আগামীতে বিদেশ যেতে হবে না। কিছুদিন আগেই আমরা ভুটানের ক্যান্সার আক্রান্ত এমন এক মেয়েকে চিকিৎসা দিয়ে ভালো করেছি। যার চিকিৎসা ভারত ও ব্যাংককেও সম্ভব হয় নাই। কাজেই বাংলাদেশ পারে না এমন কোনো কাজ নাই। এসময় স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন, বিএসএমএমইউ উপাচার্য অধ্যাপক ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ, নাভা-নোভার মাসহ অন্যান্য সিনিয়র চিকিৎসকরা।