আব্দুল কাদির
চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে তোফাজ্জুল হক (৪৫) নামে এক ভ্যানচালককে পুড়িয়ে হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় মূলহোতাসহ পাঁচ আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।পুলিশের ভাষ্য- ৪০ হাজার টাকা মূল্যের একটি ব্যাটারিচালিত ভ্যান ছিনতাই করতেই এমন হত্যাকান্ড ঘটনানো হয়েছে।বুধবার দুপুরে শিবগঞ্জ থানা অডিটোরিয়ামে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) জাহাঙ্গীর আলম। গ্রেফতারকৃতরা হলেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার বহরম হঠাৎপাড়া গ্রামের রুহুল আমিন কালু (৩৮), খাইরুল ইসলাম (৩৭), শাহিন আলী (৩৫), ফটিক আলী (২৯) ও রাজশাহীর তানোর উপজেলার বহরইল গ্রামের জুয়েল রানা (৩৪)। তবে এ ঘটনায় পলাতক রয়েছেন হারুন আলী নামে এক আসামি। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম জানান, ভ্যানচালক তোফাজ্জুল হকের সাথে মামলার মুলহোতা রুহুল আমিন কালুর সাথে ব্যবসায়িক কারণে সু-সম্পর্ক থাকায় গত ২৯ ফেব্রুয়ারী সন্ধ্যায় তোফাজ্জুলকে মোবাইল ফোনে ভাড়ার জন্য ভ্যান নিয়ে ডেকে পাঠায়। পরে খাইরুল ইসলাম, শাহিন আলী ও ফটিকের সহযোগীতায় কালু ওই রাতেই ঘোড়াপাখিয়া ইউনিয়নের ৪ নম্বর বাঁধের কাছে একটি ফসলী জমিতে নিয়ে গিয়ে আঘাতের এক পর্যায়ে হত্যা করে। হত্যার পর মরদেহ গুম করতে পাশে থাকা সরিষার খড়ের পোয়ালে মরদেহ নিয়ে রেখে আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে হত্যা করে ও চার্জার ভ্যানটি নিয়ে পালিয়ে যায়। পরে রুহুল আমিন কালু তার ভাইরা জুয়েলকে ভ্যানটি বিক্রির দায়িত্ব দিয়ে তার কাছে পাঠিয়ে দেয়। পরে জুয়েলের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী নাচোল উপজেলার বহরইল এলাকা থেকে ভ্যানটি উদ্ধার করা হয়।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরও জানান, রাতে পরিবারের লোকজন তোফাজ্জুলকে না পেয়ে খোঁজাখুঁজির এক পর্যায়ে পরদিন সকালে ঘোড়াপাখিয়ার ৪ নম্বর বাঁধের পাশে একটি ক্ষেতে আগুনে পুড়ে যাওয়া মরদেহ দেখে হাতের আংটির মাধ্যমে মরদেহটি নিশ্চিত করে তার ছেলে মাসুদ। পরবর্তীতে মাসুদ আলী ওইদিনই বাদি হয়ে শিবগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলা দায়েরের পর পুলিশ প্রযুক্তির সহায়তায় মামলার প্রধান আসামি রুহুল আমিন কালুকে গ্রেপ্তারের পর তার স্বীকারোক্তি মোতাবেক একজন বাদে সকল আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়। সেসাথে ব্যাটারি চালিত চার্জার ভ্যান উদ্ধার ও হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত আলামত জব্দ করা হয়। একই সঙ্গে মুলহোদা রুহুল আমিন কালুর আদালতে ১৬৪ ধারা জবানবন্দী দেন। সংবাদ সম্মেলনে এ হত্যাকান্ডে জড়িত অপর পলাতক আসামিকে দ্রুত গ্রেপ্তার করার আশ^াস দেয়া হয়। এ ঘটনায় পহেলা মার্চ নিহতের ছেলে মাসুদ বাদি হয়ে শিবগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।