নিউজ ডেস্ক
দুই হাজার কোটি টাকা পাচার মামলায় ফরিদপুর শহর আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন বরকত ও তার ভাই ইমতিয়াজ হাসান রুবেলসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট গ্রহণ করেছেন আদালত।
সোমবার, ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক আস-শামস জগলুল হোসেন সিআইডির দেওয়া সম্পূরক এই চার্জশিট গ্রহণ করেন। মানি লন্ডারিং মামলার চূড়ান্ত চার্জশিটে ফরিদপুর পৌরসভার বর্তমান ও সাবেক মেয়র, দুইটি ইউনিয়নের বর্তমান ও সাবেক চেয়ারম্যানসহ জেলা আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতা-কর্মীদের নাম উঠে এসেছে।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী তাপস পাল জানান, রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক শেষে চার্জশিট গ্রহণ করে আদালত। এ সময় পলাতক ৩৬ আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও জারি করা হয়।
চার্জশীটভুক্ত আসামীদের মধ্যে বর্তমানে ৩ জন জেল হাজতে ও ৭ জন জামিনে আছেন। এদের মধ্যে কারাগারে থাকা সাজ্জাদ হোসেন বরকত, ইমতিয়াজ হাসান রুবেল এবং এ এইচএম ফুয়াদকে এই দিন আদালতে হাজির করা হয়।
আর জামিনে থাকা ঢাকা টাইমস সম্পাদক আরিফুর রহমান দোলনসহ অন্য সাত আসামিও আদালতে হাজিরা দেন।
২০২০ সালের ২৬ জুন ঢাকার কাফরুল থানায় রুবেল-বরকতের নামে দুই হাজার ৫৩৫ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে মামলা করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। মামলার নথি থেকে জানা যায়, গত ২২ জুন দুই হাজার কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে সাজ্জাদ হোসেন বরকত ও তার ভাই ইমতিয়াজ হাসান রুবেলসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন সিআইডি।
পরবর্তী কার্যক্রমের জন্য মামলাটি মহানগর দায়রা জজ আদালতে পাঠানো হয়। এর আগে ২০২১ সালের ৩ মার্চ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির সহকারী পুলিশ কমিশনার (এএসপি) উত্তম কুমার সাহা ১০ জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দাখিল করেন।
মামলার বেশ কিছু অসঙ্গতি তুলে ধরে পরে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে সিআইডিকে পুনরায় তদন্তের নির্দেশ দেন। আদালতের নির্দেশে তদন্ত শেষে মামলায় ৪৬ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়।
মামলার অন্য আসামীরা হলেন, সাবেক স্থানীয় সরকার মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেনের ভাই খন্দকার মোহতেশাম হোসেন বাবর, তার এপিএস সত্যজিৎ মুখার্জী, ফরিদপুর শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি নাজমুল ইসলাম খন্দকার লেভী, শহর যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসিবুর রহমান ফারহান, খোন্দকার মোহতেশাম হোসেন বাবর, এএইচএম ফুয়াদ, ফাহাদ বিন ওয়াজেদ ওরফে ফাহিম, কামরুল হাসান ডেভিড, মুহাম্মদ আলি মিনার ও তারিকুল ইসলাম ওরফে নাসিম।
সম্পূরক চার্জশিটের নতুন আসামিরা হলেন—নিশান মাহমুদ ওরফে শামীম, মো. বিল্লাল হোসেন, মো. সিদ্দিকুর রহমান ওরফে সিদ্দিক, মো. সাইফুল ইসলাম জীবন, অ্যাডভোকেট অনিমেশ রায়, শামসুল আলম চৌধুরী, দীপক কুমার মজুমদার, শেখ মাহতাব আলী, সত্যজিৎ মুখার্জি, মো. শহীদুল ইসলাম ওরফে মজনু, ফকির মো. বেলায়েত হোসেন, গোলাম মো. নাছিম, মো. জামাল আহমেদ ওরফে জামাল, বেলায়েত হোসেন মোল্লা, মো. আফজাল হোসেন খান ওরফে শিপলু, অমিতাব বোস, চৌধুরী মো. হাসান, মো. জাফর ইকবাল ওরফে হারুন মন্ডল, বরকতের স্ত্রী আফরোজা আক্তার পারভীন, রুবেলের স্ত্রী সোহেলী ইমরুজ পুনুম, সাহেব সারোয়ার, আমজাদ হোসেন বাবু, স্বপন কুমার পাল, অ্যাডভোকেট জাহিদ বেপারী, খলিফা জামাল, হাফিজুল হোসেন তপন, রিয়াজ আহমেদ শান্ত, আনোয়ার হোসেন আবু ফকির, মো. মনিরুজ্জামান মামুন, মাহফুজুর রহমান, সুমন সাহা, মো. আব্দুল জলিল শেখ, মো. রফিক মন্ডল, খন্দকার শাহীন আহমেদ ওরফে পান শাহীন, আফজাল হোসেন খান ও সাংবাদিক মোহাম্মাদ আরিফুর রহমান ওরফে দোলন।