নিউজ ডেস্ক
চীনে ভয়াবহ বন্যা, সরিয়ে নেওয়া হলো হাজার হাজার মানুষকে চীনে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে সৃষ্ট ভয়াবহ বন্যায় ব্যাপক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে দেখা দেওয়া ব্ন্যায় এখন পর্যন্ত অন্তত তিনজন নিহত ও আরও ১১ জন নিখোঁজ রয়েছেন।
এছাড়া বন্যার কবলে পড়া প্রায় ৬০ হাজার মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। সোমবার ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীনের সর্বাধিক জনবহুল প্রদেশ গুয়াংডংয়ে কয়েকদিনের ভারী বষর্ণের কারণে ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে। কর্তৃপক্ষ বন্যা কবলিত এলাকার হাজার হাজার মানুষকে সরিয়ে নিয়েছে।
দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম সিজিটিএন বলছে, বন্যায় এখন পর্যন্ত তিনজন নিহত ও ১১ জন নিখোঁজ রয়েছেন। রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে প্রচারিত ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, বন্যায় তলিয়ে যাওয়া বিশাল এলাকা থেকে উদ্ধারকারীরা কোমর সমান পানিতে নৌকায় করে লোকজনকে সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। বন্যায় বেশ কয়েকটি বড় নদীর তীর উপচে পানিতে ডুবে গেছে লোকালয়।
দেশটির কর্তৃপক্ষ পানির উচ্চতা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। কর্তৃপক্ষ সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, উত্তর গুয়াংডংয়ের একটি নদীর পানির স্তর শত বছরের মধ্যে সোমবার সকালের দিকে সর্বোচ্চে পৌঁছাতে পারে।
তবে স্থানীয় সময় দুপুর পর্যন্ত বিপজ্জনক এই সীমায় পানির স্তর পৌঁছায়নি। গুয়াংডংয়ের বেশিরভাগ এলাকা পার্ল নদীর তীরে অবস্থিত। সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি এবং ঝড়বৃষ্টির কারণে ওই এলাকা বন্যার প্রবল ঝুঁকিতে রয়েছে। ব-দ্বীপ খ্যাত গুয়াংডং চীনের অন্যতম প্রধান উৎপাদন অঞ্চল হিসেবে পরিচিত। দেশটির সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ অঞ্চলগুলোর একটিও এই গুয়াংডং। প্রদেশটিতে ১২ কোটি ৭০ লাখের বেশি মানুষ বসবাস করেন।
বন্যায় প্রাদেশিক রাজধানী গুয়াংজুর পাশাপাশি সেখানকার তুলনামূলক ছোট শহর শাওগুয়ান এবং হেইউয়ান সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রাকৃতিক এই দুর্যোগে প্রদেশের প্রায় ১১ লাখ ৬০ হাজার পরিবার বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। তবে ৮০ শতাংশ পরিবারে রোববার রাতের মধ্যে বিদ্যুৎ সংযোগ পুনরায় চালু করা হয়েছে।
টানা বৃষ্টির কারণে গুয়াংজুর বাইয়ুন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ফ্লাইট চলাচল বাতিল ও বিলম্ব হয়েছে। সেখানকার কমপক্ষে তিনটি শহরের সব স্কুল বন্ধের নির্দেশ দেওয়া দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
বন্যার কারণে গুয়াংডং প্রদেশে কয়েক ডজন বাড়িঘর ধসে পড়েছে অথবা মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বন্যায় এই প্রদেশে প্রায় ১৯ দশমিক ৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের অর্থনৈতিক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করা ভিডিওতে দেখা যায়, প্রবল বৃষ্টির কারণে বিভিন্ন স্থানের প্রাচীর ও সেতু ধসে পড়ছে। এর আগে, গত বছরের জুলাইয়ে রাজধানী বেইজিং ও আশপাশের একাধিক প্রদেশে ভারী বৃষ্টিপাত ও বন্যা দেখা দেয়।
ওই সময় প্রশান্ত মহাসাগরে সৃষ্ট একের পর এক টাইফুন দেশটির স্থলভাগে আছড়ে পড়ে। সেই সময় কেবল এক সপ্তাহে বেইজিং ১৪০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাতের মুখোমুখি হয়।