শাহিনুর রহমান সোনা,রাজশাহী ব্যুরো
রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলার কেশরহাট পৌর বাজারে মোবাইল ব্যাংকিং ব্যবসায়ি শাহেদুজ্জামান বকুল-এর উপর সংঘবদ্ধ হ্যাকার চক্রের হামলার বিচারের দাবীতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগী।
বুধবার (২৬ জুন) সকাল ১১ টায় মোহনপুর প্রেসক্লাবে ভুক্তভোগী শাহেদুজ্জামান বকুল এই সংবাদ সম্মেলন করেন। সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে তিনি তার লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন।
বক্তব্যে তিনি উল্লেখ করেন, আমি শাহেদুজ্জামান বকুল, সাধারণ সম্পাদক, ০৭ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ, কেশরহাট পৌরসভা। আমি কেশরহাট বাজারের একজন মোবাইল ব্যাংকিং ব্যবসায়ি। আজ আমি এলাকার সংঘবদ্ধ মোবাইল ব্যাংকিং হ্যাকারদের দ্বারা নির্যাতিত এবং আহত হয়েছি।
এলাকার সর্বসাধারণের অবগতি এবং হ্যাকারদের বিষয়ে আপনাদের সামনে সামান্য কিছু তথ্য তুলে ধরতে চাই।জুন ২০২৪ ইং তারিখ আমার নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বকুল স্টোর এ প্রতিদিনের মতো ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা করছিলাম।
এমতাবস্থায় কেশরহাট পৌর এলাকার হরিদাগাছি গ্রামের মোঃ সাইফোর রহমানের ছোট ছেলে মোঃ রাব্বি আমার দোকানে এসে বলেন রকেট একাউন্ট থেকে ২৩,৫০০/- টাকা উঠাবো। তাই আমি আমার এজেন্ট নম্বর দেই। এসময় সে মোবাইলে কথা বলছিল। তার আচরণে আমার সন্দেহ হয়। আমি তাকে জিজ্ঞেস করি কে তাকে টাকা পাঠাইছে।
জবাবে রাব্বি জানান, আমার বড় ভাই। বাসা কোথায় জানতে চাইলে বলে আমার বাড়ির পাশেই বাড়ি। এরপর একটি রবি নম্বর থেকে ক্যাশ আউটের ম্যাসেজ আসে।
তখন রাব্বি ২৩,৫০০/- টাকা অন্য একটি নম্বরে পাঠাতে বলে তড়িঘড়ি করছিলেন। এরপর আমি উক্ত টাকা চেক করতে গেলে আমার রকেট অ্যাপসে ঢোকার চেষ্টা করেও আমি ঢুকতে পারিনি।
তখন আমার রকেট ডিএসও-এর সঙ্গে যোগাযোগ করে বিস্তারিত জানাই। তখন তিনি বলেন আপনার একাউন্টি এ মহূর্তে হ্যাক করেছে। যে টাকা উঠানোর জন্য এসেছে তাকে আটক করে পুলিশি সহযোগিতা নিন।
তখন প্রাথমিক ভাবে আটক করে তাকে বলি তোমার যে বড় ভাই টাকার ম্যাসেজ দিয়েছেন তাকে ডাকো। তখন সে বলে ফোন দিলে আর ফোন ধরছে না।
রাব্বি অনলাইন আউটসোর্সিং প্রতিষ্ঠানে চাকরি করে বলে জানাই এবং তার বসকে ডাকে। পরে তার বাবা ও বসসহ অফিস স্টাফরা এসে এ বিষয়ে সবকিছু শুনে, জেনে বিকেলে বসার জন্য আশ্বস্ত করে রাব্বিকে নিয়ে চলে যায়।
লিখিত বক্তব্য তিনি আরো উল্লেখ করেন, বিকেলে মিমাংসা বৈঠকের জন্য বসার আগেই হটাৎ করেই ১০-১২ জনের একটি সংঘবদ্ধ দল এসে আমাকে নানা ধরণের হুমকি-ধামকি শুরু করে।
এমতাবস্থায় আমি তাদের মিংমাসায় বসার জন্য বলি। তখনই রাব্বি, নয়ন, রাসেদুল উভয় পিতা: সাইফোর রহমান এবং সাইফোর নিজে, মাসুদ স্বর্ণকার, পিতাঃ সিরাজ সহ আরোও ৭-৮ জন আমার উপর অতর্কিত হামলা করে পালিয়ে যায়, বাজারের লোকজন আমাকে উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয় এবং মোহনপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেয়ে নিয়ে যায়।
গত ২৫ জুন ২০২৪ ইং তারিখে মোহনপুর থানায় আমি একটি লিখিত অভিযোগ করি। সবার জ্ঞাতার্থে বলছি যে, আমি এর আগেও হ্যাকিং এর শিকার হয়ে টাকা হারিয়েছি। যার অভিযোগ মোহনপুর থানায় করা হয়েছিল।
সবশেষে লিখিত বক্তব্যের মাধ্যমে তিনি বলেন, সাংবাদিক ভাইয়েরা আপনাদের মাধ্যমে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলতে চাই বাংলাদেশ সরকার মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে যে সকল ভাতা প্রদান করেন সেখানেও এই সকল হ্যাকাররা প্রতারণা করে টাকাগুলো উঠিয়ে নেয়। বাংলাদেশ সরকার স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার যে স্বপ্ন দেখছে তা এই হ্যাকারদের কারণে পিছিয়ে পড়ছে। আমি এই সকল হ্যাকারদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি, যারা অসহায় মানুষদের সর্বশান্ত করে রাতারাতি কোটিপতি হয়ে যাচ্ছে।