শিবগঞ্জে মাদ্রাসায় নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ

আব্দুল কাদির

চাঁপাইনবাবগঞ্জ শিবগঞ্জ উপজেলার তেলকুপি কলমদর আলিম মাদ্রাসার সভাপতি ও অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সদস্য রমজান আলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার নিকট লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

মাদ্রাসা সূত্র জানায়, পদগুলোর মধ্যে অফিস সহকারী কাম হিসাব সহকারী পদে মাদ্রাসার অধ্যক্ষের ছেলে জাহিদ হাসান, অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে মেয়ে শারমিন খাতুন, গবেষণা/ল্যাব সহকারী পদে সভাপতির মেয়ে জলিয়ারা খাতুন জলি, জামাতা মাইনুল ইসলাম, নিরাপত্তাকর্মী পদে নাতী গোলাম রাব্বানী, ভাতিজা আবদুল কুদ্দুস, ভাতিজা ইসমাইল, চাচাতো ভাই মিজানুর আতিকুল ইসলাম জিহাদ, অধ্যক্ষের আত্মীয় শাহিন আলম, শহিদুল ইসলাম, শওকত আলী, আয়া পদে প্রতিষ্ঠাতা সদস্য গোলাম মোস্তফার ভাতিজা বৌ পলিয়ারা বেগম ও ঢাকা শিক্ষাবোর্ডে চাকুরিরত ইব্রাহিমের সহোদর তারিক হাসান দরখাস্ত করেন।

পাঁচটি পদের বিপরীতে লোক দেখানো হয়েছে ১৪ জন প্রার্থীকে। অভিযোগে বলা হয়েছে, অধ্যক্ষ আবদুর রহিম ও মাদ্রাসা কমিটির সভাপতি মানিকুল ইসলাম মানিকের যোগসাজসে অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে অফিস সহকারী কাম হিসাব সহকারী, অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর, গবেষণা/ল্যাব সহকারী, নিরাপত্তাকর্মী ও আয়া পদে গোপনে নিয়োগ দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। তবে এ নিয়োগের ঘটনায় মাদ্রাসার শিক্ষক প্রতিনিধি, অভিভাবক ও এলাকাবাসী কিছুই জানেন না।

সরকারি নীতিমালা লঙ্ঘন করে অতি গোপনে নিয়োগ বোর্ড গঠন করে নিয়ম রক্ষার লোক দেখানো পরীক্ষার আয়োজন করছে সভাপতি ও অধ্যক্ষ। অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, নিয়োগের জন্য মাদ্রাসার নোটিশ বোর্ডে কোনো বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়নি। এমনকি পত্রিকায় যে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে, তাও স্থানীয়রা জানতে পারেননি।

মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে তাদের নিয়োগ নিশ্চিতে কাজ করেছেন অধ্যক্ষ ও সভাপতি। এছাড়া মাদ্রাসার ক্যাচমেন্ট এলাকার সাধারণ পরিবারের প্রার্থী দরখাস্ত করার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়েছে। এ নিয়ে এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। এ ঘটনায় শিবগঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরিও করা হয়েছে।

মাদ্রাসার পাশের বাসিন্দা আহসান হাবিব বলেন, বিদ্যালয়ের সঙ্গেই আমার বাড়ি অথচ আমরা জানি না, এখানে নিয়োগ দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। স্থানীয় বাসিন্দা মাজিরুদ্দিন, সুমন, তুহিন ও মিঠুনসহ অন্তত ১০ জন অভিযোগ করে বলেন, অধ্যক্ষ নিজ ইচ্ছা মতো সকল কার্যক্রম পরিচালনা করেন।

অধ্যক্ষ আবদুর রহিম জানান, নিয়োগ বাণিজ্য ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ সঠিক নয়। গ্রীষ্মকালীন ছুটি থাকায়, নোটিশ বোর্ডে বিজ্ঞপ্তি টাঙানো হয়নি। ছুটির পরে বিজ্ঞপ্তিতে টাঙানো আছে। নিয়োগ প্রক্রিয়া গোপনে সম্পন্ন করেছেন কিনা এ বিষয়ে তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি।

মাদ্রাসার সভাপতি মানিকুল ইসলাম মানিক স্বজনপ্রীতির অভিযোগটি অস্বীকার করে বলেন, নিয়ম মেনেই সকল কাজ করা হচ্ছে। পক্ষে-বিপক্ষে কিছু লোক থাকে। আমি মানিক মেম্বার ১০০ ভাগ ফেরেশতা নয়। আমিও কারো পক্ষে বিপক্ষে।

এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের একাডেমিক সুপারভাইজার মুরশিদুল আলম অভিযোগ পাবার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ঘটনাটি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

কপিরাইট © বিডি নিউজ লাইভ ৯৯ ডট কম ২০২৪ । সর্বসত্ব সংরক্ষিত।