নিউজ ডেস্ক
নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করে শাহবাগ মোড় ছেড়েছেন কোটা আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। রোববার বিকেল তিনটা থেকে ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন আন্দোলনকারীরা।
শনিবার প্রায় এক ঘণ্টা অবরোধ শেষে বেলা সাড়ে পাঁচটার দিকে সেখান থেকে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা সরে গেলে শাহবাগ মোড়ে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
বিকেল সাড়ে চারটার দিকে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ -এর ব্যানারে ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী ও চাকরি প্রত্যাশীরা শাহবাগ মোড়ে সড়ক অবরোধ করেন৷
সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা বাতিল করে ২০১৮ সালে সরকারের জারি করা পরিপত্র পুনর্বহালসহ চার দফা দাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীরা বেশ কয়েক দিন ধরে বিক্ষোভ মিছিল ও সড়ক অবরোধ করছেন।
শিক্ষার্থীরা ৪ দফা দাবি হলো:
১) ২০১৮ সালে ঘোষিত সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিল ও মেধাভিত্তিক নিয়োগের পরিপত্র বহাল রাখা। ২) পরিপত্র বহাল সাপেক্ষে কমিশন গঠনপূর্বক দ্রুত সময়ের মধ্যে সরকারি চাকরির সমস্ত গ্রেডে অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাদ দেওয়া (সুবিধাবঞ্চিত ও প্রতিবন্ধী ব্যতীত)। ৩) সরকারি চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় কোটা সুবিধা একাধিকবার ব্যবহার করা যাবে না এবং কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে শূন্যপদগুলোতে মেধা অনুযায়ী নিয়োগ দেওয়া। ৪) দুর্নীতিমুক্ত, নিরপেক্ষ ও মেধাভিত্তিক আমলাতন্ত্র নিশ্চিত করতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর সরকারি চাকরিতে নারী কোটা ১০ শতাংশ, মুক্তিযোদ্ধা কোটা ৩০ শতাংশ এবং জেলা কোটা ১০ শতাংশ বাতিল করে পরিপত্র জারি করে সরকার।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জারি করা ওই পরিপত্রে বলা হয়, নবম গ্রেড (আগের প্রথম শ্রেণি) এবং দশম থেকে ১৩তম গ্রেডের (আগের দ্বিতীয় শ্রেণি) পদে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে বিদ্যমান কোটা পদ্ধতি বাতিল করা হলো। এখন থেকে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়া হবে।
তবে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির চাকরিতে কোটা বাতিল হলেও তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির পদে কোটা ব্যবস্থা আগের মতোই বহাল থাকবে বলে ওই পরিপত্রে বলা হয়।
পরিপত্রের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ২০২১ সালে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান অহিদুল ইসলামসহ সাতজন।
আবেদনের চূড়ান্ত শুনানি শেষে গত ৫ জুন হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেয়।
ওইদিনই রায় প্রত্যাখ্যান করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ দেখান শিক্ষার্থীরা।
এরপর ওই রায় স্থগিত চেয়ে ৯ জুন আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। তবে আপিল বিভাগ তা স্থগিত না করায় আপাতত হাইকোর্টের রায় বহাল থাকছে।