কোটাবিরোধী আন্দোলনের কোন যৌক্তিকতা নেই: প্রধানমন্ত্রী

নিউজ ডেস্ক

ক্লাস-পরীক্ষা বাদ দিয়ে উচ্চ আদালতের রায়ের পর কোটাবিরোধী আন্দোলনের কোনো যৌক্তিকতা নেই বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

রবিবার গণভবনে বাংলাদেশ যুব মহিলা লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় এ মন্তব্য করেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোটা আন্দোলনের নামে শিক্ষার্থীরা অযথা সময় নষ্ট করছে। আদালতের রায়ের পর কোটা আন্দোলনের কোনো যৌক্তিকতা নেই।

তিনি বলেন, কোটা বাতিলের আন্দোলন হচ্ছে। কোটা বন্ধ করা হয়েছিল। কিন্তু হাইকোর্টের রায়ে বহাল হয়েছে। পড়াশোনা বাদ দিয়ে ছেলেমেয়েরা আন্দোলন করছে। এর কোনো যৌক্তিকতা নেই।

এ সময় যুব মহিলা লীগের নেতা-কর্মীদের সর্বজনীন পেনশন স্কিমে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।

আর বিএনপি-জামায়াতের অত্যাচার নির্যাতন যেন আর ফিরে না আসে সেজন্য বিষয়ে সবাইকে সজাগ ও সচেতন থাকার আহ্বান জানান তিনি।

চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে ধর্মঘট পালন করছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ রাজধানী ও দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা।

রোববার সকাল থেকেই সারাদেশে ধর্মঘটের পাশাপাশি দেশের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক, মহাসড়ক ও রেললাইন অবরোধ করার ঘোষণা দিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।

তারা এই কর্মসূচির নাম দিয়েছেন ‘বাংলা ব্লকেড’। কোটা বাতিলে সরকারের জারি করা পরিপত্র পুনর্বহালসহ চার দফা দাবিতে গত পহেলা জুলাই থেকে আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থী ও চাকরি প্রত্যাশীরা।

কোটা সংস্কার ও মেধাভিত্তিক নিয়োগ বাতিল করে ২০১৮ সালের পরিপত্র জারি করে সরকার। গত ৫ জুন সেই পরিপত্রের আংশিক আংশিক অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্ট।

তবে এ আদেশ না মেনে ২০১৮ সালের পরিপত্র পুনর্বহালের দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। গত কয়েকদিন ধরে শাহবাগ ও বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টের নাম ঘোষণা করছেন আন্দোলনকারীরা। শনিবার শাহবাগে 'বাংলা ব্লকেড' কর্মসূচি ঘোষণা করেন তারা।

এর ব্যাখ্যায় তারা জানান, রোববার সারা দেশের গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়ক আটকে দিয়ে যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া। কর্মসূচির আওতায় ঢাকার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়ক অবরোধ করবেন তারা।

২০১৮ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে ৫৬ শতাংশ কোটা প্রচলিত ছিলো। এর মধ্যে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা, ১০ শতাংশ নারী কোটা, অনগ্রসর জেলার বাসিন্দাদের জন্য ১০ শতাংশ কোটা, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মানুষদের জন্য ৫ শতাংশ আর প্রতিবন্ধীদের জন্য ১ শতাংশ আসন সংরক্ষিত ছিলো।

একই বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন হয়। কোটা ব্যবস্থার সংস্কার করে ৫৬ শতাংশ থেকে ১০ শতাংশে নামিয়ে আনার দাবি জানিয়েছিলেন আন্দোলনকারীরা। পরে ওই বছরের ৪ অক্টোবর কোটা বাতিল বিষয়ক পরিপত্র জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।

এ পরিপত্র চ্যালেঞ্জ করে রিট করেন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও প্রজন্ম কমান্ড কাউন্সিলের সভাপতি অহিদুল ইসলামসহ সাত শিক্ষার্থী। এর প্রেক্ষিতে জারিকৃত পরিপত্রটিকে অবৈধ বলে ঘোষণা করে হাইকোর্ট।

কপিরাইট © বিডি নিউজ লাইভ ৯৯ ডট কম ২০২৪ । সর্বসত্ব সংরক্ষিত।