বি এম রুবেল আহমেদ
চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাট উপজেলার আলালপুর দারুস সুন্নাত দাখিল মাদ্রাসার সুপারিন্টেন্ডেন্ট (সুপার) বজলুর রহমানের বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতির প্রতিকার চেয়ে লিখিত অভিযোগ করেছেন আলালপুর গ্রামের জসিমুদ্দীন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, সুপারিন্টেন্ডেন্ট (সুপার) বজলুর রহমান তার একচ্ছত্র ক্ষমতার দাপটে নতুন-পুরাতন বই বিক্রি সহ নানান অনিয়ম-দুর্নীতিতে অতিষ্ঠ আমরা এলাকাবাসী।মাদ্রাসার সুপারিন্টেন্ডেন্ট (সুপার) বজলুর রহমান সরকারি নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করেই ২০২৩ সালে বিগত কয়েকবছরের প্রথম শ্রেণি থেকে শুরু করে দশম শ্রেণি পর্যন্ত সকল ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে থেকে সংগৃহীত পুরাতন বই এবং অবশিষ্ট নতুন বই বিক্রি করে প্রায় ৬৫ হাজার টাকার। যা পুরোটাই চলে যায় সুপার বজলুর রহমানের পকেটে! নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করেই ২০২৩ সালে নিয়মিত কমিটি না থাকার অজুহাতে ২০২৪-২০২৫ সালের জন্য অগ্রীম বিক্রি করা হয়েছে মাদ্রাসার সীমানার মধ্যকার আম গাছগুলোর আমফল। যার পুরোপুরি অর্থ বগলদাবা করে নেয় সুপার নিজেই। এমনকি মাদ্রাসার নামীয় আবাদি জমিগুলোও রেহাই পায়নি তার খপ্পর থেকে। প্রকাশ্যে নিলামে না দিয়ে রাতের অন্ধকারে টেন্ডার দেওয়া হয়েছে। যার অর্থগুলোর কোনো টাকা জমা হয়নি মাদ্রাসার ব্যাংক একাউন্টে। ব্যবহার করা হয়না জমা খরচের কোনো রেজিস্ট্রার খাতাও। অন্য দিকে অত্র মাদ্রাসার দাখিল পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে কোচিংয়ের নামে কর্তন কৃত টাকা এবং সহকারী শিক্ষকদের টিউশন ফি'র টাকা আত্মসাৎ করে রেখেছে যা আমরা এলাকার সাধারণ মানুষ অবগত। শুধু তাই নয় গভর্নিং বডির সভাপতি সহ দাতা সদস্য করার আশ্বাসে বিভিন্ন সময় নতুন নতুন করে দাতা সদস্য সৃষ্টির নামে অনেকের কাছ থেকে ডোনেশনও নিয়েছেন তিনি। পুরাতন ভবন সংস্কারের নামে বরাদ্দকৃত টাকা থেকে কাজের মান নিম্নমান করার বদৌলতে নিয়োগ কৃত ঠিকাদারকে ম্যানেজ করে ৩৫ হাজার টাকা নিয়েছেন। এমন দুর্নীতিবাজ প্রতিষ্ঠান প্রধানের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগের যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের নিমিত্তে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার অতিব প্রয়োজন। তাছাড়া তিনি বেশ কিছুদিন আগে নিয়োগ বাণিজ্য করার লক্ষ্যে গোপনীয়ভাবে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছেন যা এলাকার আমরা কেউ জানিনা। যেখানে আবেদন করার সুযোগ দেওয়া হয়নি কোনো আগ্রহী প্রার্থীদেরকে। এরকম নানা অনিয়ম এবং দূর্নীতির অভিযোগ করেন মোঃ জসিমুদ্দীন। সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে কঠোর শাস্তি সহ পূনরায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্বচ্ছতার সহিত নিয়োগ প্রক্রিয়া করার জন্য জোর দাবি জানান তিনি। সাথে বিচারও দাবি করেছেন অভিযোগকারী জসিমুদ্দীন। সুপার বজলুল রহমান সরকার বিরোধী কর্মকাণ্ড করেন বলেও অভিযোগ করেন তিনি। তিনি আরও অভিযোগ করেন, ২০২২ সালেও নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির আগেই অর্থ কেলেঙ্কারির জন্য নিয়োগ বন্ধ হয়ে যায়।উল্লেখ্য, সদয় অবগতি এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের কাছে অনুলিপি জমা দিয়েছেন অভিযোগকারী জসিমুদ্দীন
এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাহমিদা আক্তারের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন অভিযোগ হাতে পেয়েছি তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এদিকে উপজেলা শিক্ষা অফিসার (অঃদাঃ) মোঃ আব্দুর রশিদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর তাকে ডেকে লিখিত জবাব দিতে বলা হয়েছে। সন্তোষজনক জবাব না পেলে সরেজমিন তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান।
এবিষয়ে কথা বলার জন্য আলালপুর দারুস সুন্নত দাখিল মাদ্রাসার সুপার বজলুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেনননি।