সোমবার, ৯ই পৌষ ১৪৩১, ২৩শে ডিসেম্বর ২০২৪
BD NEWS LIVE 99
BD NEWS LIVE 99

যুদ্ধে ব্যয় না করে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় অর্থ খরচ করার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

ছবি: সংগৃহীত

নিউজ ডেস্ক

যুদ্ধে ব্যয় না করে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় অর্থ খরচ করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, এতে করে বিশ্ব রক্ষা পাবে।

সোমবার (২২ এপ্রিল) রাজধানীর চীন মৈত্রি সম্মেলনে ন্যাপ এক্সপো-২০২৪ এবং বাংলাদেশ ক্লাইমেট ডেভলাপমেন্ট পার্টনারশিপ (বিসিডিপি) এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশে সংঘটিত ১৯৭০ সালে মহাপ্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে প্রায় পাঁচ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। ’৯১ সালে আরেকটি ঘূর্ণিঝড়ে দুই লাখ মানুষ মারা যায়।

কিন্তু ২০২৩ সালে ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’য় কোনো প্রাণহানি ঘটেনি। এটি জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজন এবং দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসে বাংলাদেশের সক্ষমতার বহিঃপ্রকাশ। তিনি বলেন, গত ১৫ বছরে পার্বত্য ও শাল বনাঞ্চলের প্রায় এক লাখ ২৭ হাজার ৫৪৮ হেক্টর এলাকায় বৃক্ষরোপণসহ ৮৯ হাজার ৮৫৩ হেক্টর উপকূলীয় বন সৃজন করা হয়েছে।

স্থানীয় জনগণকে সম্পৃক্ত করে আমরা সামাজিক বনায়ন বিধিমালা ২০১০ (সংশোধিত) প্রণয়ন করেছি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, জলবায়ু উদ্বাস্তু পরিবারের জন্য কক্সবাজার জেলায় আমরা বিশ্বের বৃহত্তম ‘খুরুশকুল বিশেষ আশ্রয়ণ প্রকল্প’ নির্মাণ করেছি।

এ প্রকল্পের আওতায় ১৩৯টি বহুতল ভবন নির্মাণ করে চার হাজার ৪০৯টি জলবায়ু উদ্বাস্তু পরিবারকে পুনর্বাসনের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এ ছাড়া আমরা জলবায়ু উদ্বাস্তু, প্রাকৃতিক দুর্যোগে ভূমিহীন, গৃহহীন, সমাজের পিছিয়ে পড়া অন্যান্য সম্প্রদায়ের মানুষকে জমিসহ ঘর প্রদান করেছি এবং তাদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করা হয়েছে।

এ পর্যন্ত আমরা প্রায় ৪২ লাখ মানুষকে পুনর্বাসন করেছি। ঢাকায় গ্লোবাল সেন্টার অন অ্যাডাপ্টেশনের দক্ষিণ এশিয়া আঞ্চলিক অফিসের মাধ্যমে সর্বোত্তম অনুশীলনগুলো ভাগ করে নেওয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। তিনি বলেন, বৈশ্বিক কার্বন নিঃসরণে আমাদের অবদান শূন্য দশমিক ৪৮ শতাংশের কম হলেও এর নেতিবাচক প্রভাবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত ও ঝুঁকিপূর্ণ দেশসমূহের মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম।

জলবায়ু পরিবর্তনের এই বিরূপ প্রভাব আমাদের সম্ভাব্য উন্নয়ন এবং অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির জন্য হুমকি হিসেবে দেখা দিয়েছে। অব্যাহত বৈশ্বিক উষ্ণায়নের ফলে সমুদ্রতলের উচ্চতা, লবণাক্ততা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

এর ফলে বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাংশের বিস্তীর্ণ অঞ্চল যা দেশের মোট আয়তনের প্রায় ১২-১৭ শতাংশ, এ শতাব্দীর শেষদিকে সমুদ্রগর্ভে নিমজ্জিত হওয়ার ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।

বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডের মধ্যে সীমিত রাখার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, গ্রিন হাউস গ্যাস নিঃসরণ হ্রাসে বাংলাদেশ ২০১৫ সালে ‘Intended Nationally Determind Contribution (INDC) প্রণয়ন করে এবং ২০২১ সালে তা হালনাগাদ করে ইউএনএফসিসিসি তে জমা দেয়। এতে আমরা শর্তহীন ৬ দশমিক ৭৩ এবং শর্তযুক্ত ১৫ দশমিক ১২ শতাংশ গ্রিন হাউস গ্যাস নিঃসরণ হ্রাসের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছি।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে আমরা জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার হ্রাস করে নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বৃদ্ধি করেছি যাতে গ্রিন হাউস গ্যাস নিঃসরণ হ্রাস পায়। এ পর্যন্ত প্রায় ৬০ লাখ সোলার হোম সিস্টেম স্থাপন এবং গ্রামাঞ্চলে ৪৫ লাখেরও বেশি উন্নত চুলা বিতরণ করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ২০২৩ সালে মুজিব ক্লাইমেট প্রসপারিটি প্ল্যান (এমসিপিপি) প্রণয়ন করেছি। এতে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলা করে বিপদাপন্নতা থেকে সহিষ্ণুতা এবং সহিষ্ণুতা থেকে সমৃদ্ধি পর্যায়ে পৌঁছানোর লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।

এ ছাড়া এমসিপিপি তে অভিযোজন ও প্রশমন কার্যক্রমে স্থানীয় জনগণের স্বপ্রণোদিত অংশগ্রহণ, প্রকৃতি-ভিত্তিক সমাধান ও সমাজের সকলের অংশগ্রহণের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ইতোমধ্যে জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনা (এনএপি) ২০২২-২০৫০ প্রণয়ন করেছে। ২০২২ সালের অক্টোবরে এটি ইউএনএফসিসিসি তে দাখিল করা হয়েছে।

এ পরিকল্পনায় আমরা ১১টি জলবায়ু ঝুঁকিযুক্ত এলাকাতে ৮টি খাতে ১১৩টি অগ্রাধিকারমূলক কার্যক্রম চিহ্নিত করেছি। ধনী দেশ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আগামী ২৭ বছরে এনএপি গৃহীত কর্মপরিকল্পনাসমূহ বাস্তবায়নের জন্য আমাদের প্রায় ২৩০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের প্রয়োজন।

এ জন্য সুনির্দিষ্ট তহবিল ও অতিরিক্ত আর্থিক সংস্থানের ব্যবস্থা গ্রহণে আমি ধনী দেশ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানাই। তিনি বলেন, উন্নত দেশসমূহ ব্যাপক কার্বন নিঃসরণের মাধ্যমে বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধিতে অধিক ভূমিকা রেখে চলেছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত জনগণকে রক্ষা করা তাদের নৈতিক দায়িত্ব।

আমরা জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সম্ভাব্য ক্ষতি হ্রাসে অভিযোজন ও প্রশমন উভয় ক্ষেত্রে উপযোগী কার্যক্রম গ্রহণ করে যাচ্ছি। এক্ষেত্রে ইউএনএফসিসিসি -এর লাস এন্ড ডেমেজ তহবিল হতে অর্থ প্রাপ্তির জন্য বাংলাদেশ প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করবে।

Share:
মন্তব্য সমুহ
মন্তব্য করতে লগইন করুন অথবা নিবন্ধন করুন
আর্কাইভ

Follow Us

এলাকার খবর

ad

ফিচার নিউজ

১৬ই ডিসেম্বর ২০২৪ দুপুর ০১:৪১ / জাতীয়

জাতীয় পতাকা বুকে নিয়ে জামিয়া আরাবিয়া নুরুল ইসলাম…

১৬ই ডিসেম্বর ২০২৪ দুপুর ০১:২৫ / বিনোদন

দেড় দশক পর বিজয়ের উৎসবে একসঙ্গে ওরা চারজন

১৬ই ডিসেম্বর ২০২৪ দুপুর ০১:১৪ / আন্তর্জাতিক

বাংলাদেশ নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের গভর্নরের সঙ্গে কংগ্রেসের বৈঠক

১৫ই ডিসেম্বর ২০২৪ রাত ১০:২২ / জাতীয়

ইজতেমা ময়দানেই জোড় করার ঘোষণা সাদপন্থিদের

১২ই ডিসেম্বর ২০২৪ রাত ১১:০১ / জাতীয়

তথ্য উপদেষ্টার বক্তব্য নিয়ে ধোঁয়াশা,

৫ই ডিসেম্বর ২০২৪ বিকাল ০৫:২৬ / বিনোদন

সাবেক স্বামীর বিমান ছিনতাই, মুখ খুললেন সিমলা

১৩ই নভেম্বর ২০২৪ রাত ১১:৩৫ / রাজশাহী জেলা

জ্ঞানের আলো এক্সপ্রেস ধাদাশ টু মহাকাশ যাএা শুরু