চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি
>২০১৭ সালে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার দেবীনগর ইউনিয়নে এক বিএনপি কর্মীকে আশার আলো কোচিং সেন্টার থেকে তুলে নিয়ে গুম করার ঘটনায় দেবীনগর ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিঃ সহ সভাপতি মোঃ হাফিজুর রহমান কে প্রধান ও তৎকালীন দেবীনগর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মোঃ আশরাফুল হক(৬০) সহ মোট ৬ জন এজাহারভুক্ত ও ১০ থেকে ১২ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর আমলী আদালতে মামলা হয়েছে।রোববার দুপুরে চাঁপাইনবাবগঞ্জে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিসট্রেট আশরাফুল ইসলাম এর আমলী আদালতে বাদী হয়ে মামলাটি করেন গুম হওয়া বিএনপি কর্মী আরিফুল ইসলাম এর মা মোসাঃ শরিফন খাতুন।;মামলাটির বক্তব্য এজাহার হিসাবে গ্রহণ করেন সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিসট্রেট মোঃ আশরাফুল ইসলাম। মামলায় অপর উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন তৎকালীন চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাবের রেজা আহম্মেদ(৪৭), সহ ৬ জন এজাহারভুক্ত ও ১০ থেকে ১২ জন অজ্ঞাত আসামি।
বাদীর পক্ষে মামলাটি দায়ের করেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সিনিয়র অ্যাডভোকেট মোঃ নুরুল ইসলাম (সেন্টু)।মলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ভিকটিম ওই সময় আশার আলো কোচিং সেন্টারে ক্লাস নিতেন।ভিকটিম আরিফুল তখন বিএনপির সক্রিয় কর্মী ছিলেন।মামলার ১নং আসামি মোঃ হাফিজুর রহমান এর মদদে ২ নং আসামি মোঃ হামিদুর রহমান (রায়হান) ৩ নং আসামি আশরাফুল হক ভিকটিমকে বিভিন্ন সময় গুম,খুন ও প্রাণনাশের হুমকি দিতেন। এতে বাদী ভয়ে ভীতসন্ত্রস্ত থাকতেন।জাহারে উল্লেখ করেন ভিকটিম আরিফুল ইসলাম কে গত ২০১৭ সালের ১ জুলাই দুপুর ২.৩০ মিনিটে আরিফুল এর নিজস্ব কোচিং সেন্টার থেকে আসামীদের যোগসাজশে সাদা পোশাক পরিহিত এবং তাদের প্রত্যেকের হাতে থাকা আগ্নেয়াস্ত্র পিস্তল,চাইনিজ কুড়াল, রামদা সহ বিভিন্ন অস্ত্রসস্ত্রে সজ্জিত অবস্থায় সাদা মাইক্রোযোগে ভিকটিমের কোচিং সেন্টার তথা ঘটনাস্থলে এসে কোচিং সেন্টারের চতুদিক ঘিরে ফেলে এবং কোচিং সেন্টারে অবস্থানরত ভিকটিম মোঃ আরিফুল ইসলাম (২৫) কে ধরে ফেলে এলোপাথাড়িভাবে মারধর করে আসামী গন মৃত্যু ও জখমের হুমকি ও ভয়ভীতি দেখিয়ে ভিকটিমকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে তাকে অপহরণ করে মাইক্রোযোগে অজ্ঞাতনামা স্থানে নিয়ে যায়।
আরিফুল এর মাসহ পরিবারের সদস্যরা চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর থানা,ডিবি অফিসে ছেলের সন্ধান জানতে চাইলে তারা জানায় আরিফুল এর খবর আমরা জানিনা।বাদী মোসাঃ শরিফুন খাতুন গণমাধ্যম কর্মীদের জানান, তিনি প্রাণভয়ে এতদিন মুখ খুলতে পারেননি। এখন অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি হওয়ায় তিনি এ মামলাটি রুজু করেছেন। এ সময় বাদী মোসাঃ শরিফন খাতুন তার ছেলের সন্ধান চান এবং ছেলের গুমের সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
মামলার আইনজীবী মোঃ নুরুল ইসলাম (সেন্টু) জানান সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ১৬ বছর শাসনামলে প্রায় ১০ হাজার ব্যক্তিকে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা বিভিন্ন আইনশৃংখলা বাহিনীর সহযোগিতায় তুলে নিয়ে অসংখ্য মায়ের কোল খালি করেছে কিংবা সন্তানদের বাবা হারা করিয়েছেন। এধরণের পুনরাবৃত্তি যেন আর না ঘটে এজন্য গুমের মতো নোংরা কাজের সহিত জড়িতদের দৃষ্টান্ত মুলক বিচার দাবী করেন তিনি।