কামাল সুকরানা
শীতের আমেজে পিঠা উৎসব বাঙালী সাংস্কৃতির চিরাচরিত ঐতিহ্য। নতুন প্রজন্মকে দেশীয় পিঠার স্বাদ গ্রহণ করতে ও পরিচিত করাতে বুধবার থেকে শুক্রবার পর্যন্ত জেলা শিল্পকলা একাডেমির আয়োজনে ও জেলা প্রশাসনের সগযোগিতায় চাঁপাইনবাবগঞ্জে শিল্পকলা একাডেমীতে ৩দিন ব্যাপী জাতীয় পিঠা মেলা ও লোক-সাংস্কৃতি উৎসবের আয়োজন করা হয়। কেউ বানিয়ে আনেন পিঠা আবার কেউ তৈরী করেন। আর জেলার ঐতিহ্য কলাইয়ের রুটিও তৈরী করা হয়, যা আগত দর্শনার্থীরাও আগ্রহ ভরে খান। এসব পিঠা বানিয়ে আনেন বালুগ্রাম আদর্শ কলেজ ও নবাবগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। বিভিন্ন পিঠার স্বাদ নিতে ভিড় করেন অনেকেই, আবার পিঠা কিনে বাসা-বাড়ির জন্যও নিয়ে যান। শেষদিনে ছিল পিঠাপ্রেমীদের উপচে পড়া ভীড়, যা চলে রাত ৯টা পর্যন্ত। স্টলগুলোতে ডিম পাটিসাপটা, বকুল পিঠা, পুরি পিটা, তিল পিঠা, রোল ভাপা পিঠা, ফুল পিঠা, নকশী পিঠা, কাঁচা কলার পিঠা, গড়গড়া, আপেল পিঠাসহ নানান নামের মজাদার পিঠা। নবাবগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক শাহনাজ বেগম জানান, গ্রাম বাংলার সংস্কৃতি হারিয়ে যেতে বসেছিল। এ ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করায় আয়োজকদের প্রতি রইলো কৃতজ্ঞতা। শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন স্বাদের পিঠা বানিয়ে হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্যকে তুলে ধরতে পেড়েছে। এ উৎসব প্রতি বছর হয় সে আশা ব্যক্ত করেন। গতকাল শুক্রবার রাতে আলোচনা সভা, পুরস্কার প্রদান ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে শেষ হয় ৩ দিনের জাতীয় পিঠা মেলা ও লোক সংগীত উৎসব। জেলা কালচারাল অফিসার ড. মোঃ ফারুকুর রহমান ফয়সলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনাসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন, রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের প্রফেসর ড. এ. এইচ এম, তাহমিদুর রহমান। বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন, নবাবগঞ্জ সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোঃ গোলাম মোস্তফা। একাডেমী প্রাঙ্গণে ৩দিনের এই পিঠা উৎসবে অংশগ্রহণকারী সেরা ৩টি স্টলকে পুরস্কার এবং বাকি স্টগুলোকে শান্তনা পুরস্কার প্রদান করা হয়। এর আগে জেলার বিভিন্ন সংগঠনের শিল্পীদের পরিবেশনায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানটি ছিল মনমুগ্ধকর।