সোমবার, ৯ই পৌষ ১৪৩১, ২৩শে ডিসেম্বর ২০২৪
BD NEWS LIVE 99
BD NEWS LIVE 99

এইচএসসিতে বাঁশখালীর বাকপ্রতিবন্ধী দিদারুলের সাফল্য


News Desk

অদম্য উচ্ছাশক্তির কাছে প্রতিবন্ধকতার যেনো পরাজয়, চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার রত্নপুরের বাকপ্রতিবন্ধী সেই দিদারুল এইচএসসিতেও সাফল্য অর্জন করায় আনন্দিত পরিবারের সদস্যরা। হার মানতে মোটেও রাজি নন জন্মগত বাকশক্তিহীন দিদারুল আলম, প্রতিবন্ধীরা যে দেশের জন্যে বোঝা নয় সেটি প্রমাণ করতেই যেনো তার জীবন যুদ্ধ, এতে সকল প্রতিবন্ধকতার পরাজয় ঘটিয়ে আরো একধাপ এগিয়ে ঢাকা মীরপুর ১৪ গুলশান সরকারি (বিএম) কলেজ থেকে এইচএসসিতে জিপিএ ৪.৭১ পেয়েছে দিদারুল আলম।

দিদারুল আলম চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার বাহারচড়া ইউনিয়নের দক্ষিণ রত্মপুর গ্রামের মনির আহমদ ও মৃত মর্তুজা বেগমের ছেলে। ৬ ভাই-বোনের মধ্যে তৃতীয় হলো দিদারুল আলম। প্রান্তিক এলাকার কৃষক পরিবারের দিদারুল জন্মগত ভাবে বাকপ্রতিবন্ধী হওয়াতে স্বজনদের সাথে কখনো জবান খোলে মনেরভাব প্রকাশ করতে পারেনি, এমনকি স্বজনদের কোনো কথাও একটি বারের জন্যে কানে শুনতে পায়নি, কারণ সে শুধু বাকপ্রতিবন্ধী তা নয় বরং শ্রবণশক্তিহীনও বটে। সকল প্রতিবন্ধকতাকে পরাজিত করে এইচএসসিতেও সাফল্য অর্জন করে প্রতিবন্ধীরা যে পরিবার, সমাজ ও দেশের জন্যে বোঝা নয় সেই দৃষ্টান্ত স্থাপন করলো দিদারুল আলম। তার বড় ভাই মোঃ দেলোয়ার বলেন, আমরা ৬ ভাই-বোনের মধ্যে দিদারুল আলম তৃতীয় নাম্বার, সে জন্মগত ভাবে বাক ও শ্রবণশক্তিহীন, তবে তার ইচ্ছা শক্তি যেনো হিমালয়ের মতো অটুট।

সে সমাজ সেবা অধিদপ্তর পরিচালিত চট্টগ্রামের মুরাদপুরস্থ প্রতিবন্ধী স্কুল থেকে ৭ম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা শেষ করে, কিন্তু প্রতিবন্ধীদের জন্যে এর চেয়ে বেশি পড়াশোনা করার মতো ব্যবস্থ চট্টগ্রামে না থাকায় তাকে সমাজ সেবা অধিদপ্তর পরিচালিত সরকারি প্রতিবন্ধী স্কুল ঢাকার মীরপুর ১৪ তে ভর্তি করানো হলেও ওই স্কুলের হোস্টেল আসন খালি না থাকায় অনাবাসিক হিসেবে পড়াশোনা শুরু করে দিদারুল, তবে দূর্ভাগ্য হলেও সত্য যে, আমার বাসা ছিলো টঙ্গীর গাজীপুরে, অনেক দূর পথ অতিক্রম করে বাসা থেকে স্কুলে যাওয়া -আসা করা খুবই কষ্টসাধ্য হলেও পড়াশোনা করতে স্কুলে নিয়মিত উপস্থিতি হয়ে যেতো সে, তার এই অদম্য ইচ্ছাশক্তি ও নিরলস পরিশ্রম যেনো তাকে গন্তব্যে পৌঁছাতে সম্ভব করেছে। এতে সে এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ- ৩.৬৭ পেয়ে পাশ করে।

তবে এখানে এক মহৎ ব্যক্তির কৃতজ্ঞতা প্রকাশ না করলেই হয়না, টঙ্গীর গাজীপুর থেকে মীরপুর ১৪তে যাওয়া- আসা করতে যখনই দিদারুলের খুব বেশি কষ্টসাধ্য হচ্ছিল ঠিক সেই সময়ে আমার এলাকার হামিদুর রহমান নামে এক বড় ভাই মানিকগঞ্জের সিঙ্গার উপজেলায় এসিল্যান্ড হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন, বিষয়টি তাঁকে অবহিত করার সাথে সাথে স্কুল কতৃপক্ষকে ফোন করে স্কুল হোস্টেলে দিদারুলের সিটের ব্যবস্থা করেছিলেন তিনি। তাঁর প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ।

আমার ছোট ভাই দিদারুল আলম বাকপ্রতিবন্ধী ও শ্রবণশক্তিহীন হওয়া সত্বেও অদম্য ইচ্ছাশক্তিতে যে সফলতা পেয়েছে তাতে আমি ও আমাদের পরিবারের সবাই আনন্দিত,আমার মা বেঁচে থাকলে তার এই সফলতার কথা শুনে হয়তো আরো বেশি আনন্দিত হতেন।

এসময় দেলোয়ার আরো বলেন, ছোট ভাই দিদারুলকে নিয়ে বড় ভাই হিসেবে খুবই চিন্তিত ছিলাম, মাও বেশি চিন্তিত ছিলেন তাকে নিয়ে। কিন্তু পরিবারের বোঝা হিসেবে নয় বরং তার ভবিষ্যত নিয়ে। তবে তার সফলতা এটাই প্রমাণিত হলো প্রতিবন্ধীরা যে পরিবার, সমাজ ও দেশের জন্যে বোঝা নয় বরং তারাও যে অমূল্য রত্ম।

Share:
মন্তব্য সমুহ
মন্তব্য করতে লগইন করুন অথবা নিবন্ধন করুন
আর্কাইভ

Follow Us

এলাকার খবর

ad

ফিচার নিউজ

১৫ই ডিসেম্বর ২০২৪ রাত ১০:২২ / জাতীয়

ইজতেমা ময়দানেই জোড় করার ঘোষণা সাদপন্থিদের

১২ই ডিসেম্বর ২০২৪ রাত ১১:০১ / জাতীয়

তথ্য উপদেষ্টার বক্তব্য নিয়ে ধোঁয়াশা,

৫ই ডিসেম্বর ২০২৪ বিকাল ০৫:২৬ / বিনোদন

সাবেক স্বামীর বিমান ছিনতাই, মুখ খুললেন সিমলা

১৩ই নভেম্বর ২০২৪ রাত ১১:৩৫ / রাজশাহী জেলা

জ্ঞানের আলো এক্সপ্রেস ধাদাশ টু মহাকাশ যাএা শুরু