চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা শহরের বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষধ্যক্ষের বিরুদ্ধে করা অভিযোগের তদন্ত। আজ রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে জেলা শহরে অবস্থিত জাহাঙ্গীর কলেজে তদন্ত টিমের সদস্যরা কলেজে যান।
জানা গেছে, বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সরকারি কলেজের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের প্রভাষক সৈয়দা রেহানা আশরাফীর আবেদনের প্রেক্ষিতে এ তদন্ত।
অভিযোগকারী সৈয়দা রেহানা আশরাফী শিক্ষা মন্ত্রণালয় বরাবর আবেদনে উল্লেখ্য করেন অধ্যক্ষ এজাবুল হক (বুলি) তাকে ইভটিজিং, র্যাগিং, হুমকী প্রদানসহ বিভিন্ন বিষয়ে ক্ষতি সাধন করে আসছেন। প্রেক্ষিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক চিঠিতে চলতি বছরের গত ২৩ জানুয়ারী রাজশাহী আঞ্চলিক অফিসের ২ জন কর্মকর্তাকে তদন্তের নির্দেশ দেয়া হয়। এ নির্দেশে ১৫ কার্য দিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার নির্দেশ থাকলেও অজ্ঞাত কারণে তদন্ত করা হয়নি বলে অভিযোগ করেন অভিযোগকারী। অবশেষে তিনি আবারও আবেদন করায় রাজশাহী আঞ্চলিক অফিসের নতুন পরিচালক প্রফেসর ড. বিশ্বজিত ব্যানাজী অভিযোগটি তদন্তের উদ্যোগ নেন।
এরপর আজ কলেজে পৌছে তদন্ত টিমের সদস্যরা প্রথমে অভিযোগকারীর বক্তব্য শোনেন। তদন্তকালে সহকারী অধ্যাপক জোহরুল ইসলাম, প্রভাষক মোহাঃ জোনাব আলী, বিএম মামুনুর রশিদ, মজিবুর রহমানসহ কয়েকজন অধ্যক্ষের স্বেচ্ছাচারিতা, দুর্নীতি ও অনিয়মের তথ্য তুলে ধরেন। তদন্ত টিমের সদস্যরা সার্বিক বিষয় লিপিবদ্ধ করেন এবং খুব তাড়াতাড়ি কলেজের অধ্যক্ষের বিষয়সহ সবকিছুর সমাধানের আশ্বাস প্রদান করেন।
তদন্ত টিমে পরিচালকের সাথে ছিলেন একই অফিসের সহকারী পরিচালক (কলেজ) আলমাছ উদ্দীন ও আব্দুর রহিম এবং এই অফিসের একজন পরিদর্শক। তদন্তকালে উপস্থিত ছিলেন জেলা শিক্ষা অফিসার আব্দুর রশিদ, নবাবগঞ্জ সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. মোজাহারুল ইসলাম, জেলা শিক্ষা অফিসের সহকারী পরিদর্শক ফজলে রাব্বিসহ আরো কয়েকজন সরকারি কর্মকর্তা।
ঐ কলেজের সকল শিক্ষক-কর্মচারী উপস্থিত থাকলেও অভিযুক্ত অধ্যক্ষ এজাবুল হক কলেজে অনুপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য যে, কলেজের বৈষম্য বিরোর্ধী ছাত্র সমাজ অধ্যক্ষ এজাবুল হক বুলির পদত্যাগ চেয়ে আন্দোলন শুরু করে। এ প্রেক্ষিতে তিনি অধ্যক্ষ গত ১৮ আগস্ট দুপুর থেকে বিভিন্ন অজুহাতে এখন পর্যন্ত কলেজে অনুপস্থিত রয়েছেন। শুধু তাই নয়। এ বিয়য়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রশাসক বরাবর শিক্ষার্থীরা আবেদন করায় অধ্যক্ষকে গত ২১ আগস্ট কলেজে উপস্থিত থাকতে বলায় তিনি শিক্ষার্থীদের দুর্বৃত্ত ও দুস্কৃতিকারী বলে আখ্যা দিয়ে জেলা প্রশাসক বরাবর চিঠি দিয়েছেন।
অন্যদিকে অধ্যক্ষ এজাবুল হক বুলির অপসারণ চেয়ে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র সমাজ গত ২০ আগস্ট থেকে সভা, মিছিল, ডিসি অফিসে আবেদনসহ বিভিন্ন কর্মসূচী পালন করে আসছে। এই আন্দোলনের মধ্যেই অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে আগের আবেদনের তদন্ত হলো। তদন্তের শেষ দিকে কলেজের শিক্ষার্থীরা অধ্যক্ষের বিভিন্ন অনিয়মের বিষয় তুলে ধরে তদন্ত টিমের কাছে বর্তমান অধ্যক্ষকে অপসারণ এবং তার পরিবর্তে বিসিএস ক্যাডার শিক্ষককে অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ দেয়ার দাবি করে।