নিউজ ডেস্ক
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নেত্রকোণার ৫টি সংসদীয় আসনের ২৭ জন প্রার্থীর মধ্যে একজন সাবেক এমপিসহ জামানত হারিয়েছেন ১৯ জন প্রার্থী।নির্বাচন কমিশনের বিধি অনুযায়ী জামানত রক্ষা করতে মোট বৈধ ভোটের আট ভাগের এক ভাগ ভোট পাওয়ার নিয়ম থাকলেও ওই ১৯ জন প্রার্থী তা না পাওয়ায় তাদের জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে।
জামানত হারানো প্রার্থীরা হলেন-
নেত্রকোণা-১ (দুর্গাপুর-কলমাকান্দা) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী আফতাব উদ্দিন (ঈগল), জাতীয় পার্টির গোলাম রব্বানী (লাঙ্গল), বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের আহমদ শফী (ছড়ি); নেত্রকোণা-২ (সদর-বারহাট্টা) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী সুব্রত চন্দ্র সরকার (ট্রাক), জাতীয় পার্টির রহিমা আক্তার (লাঙ্গল), ইসলামী ঐক্যজোটের মো. ইলিয়াস (মিনার), বিএনএম’র এবিএম রফিকুল হক তালুকদার (নোঙ্গর), বাংলাদেশ কংগ্রেসের আজহারুল ইসলাম খান (ডাব); নেত্রকোণা-৩ (কেন্দুয়া-আটপাড়া) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও সাবেক এমপি মঞ্জুর কাদের কোরাইশী (ঈগল), জাতীয় পার্টির জসিম উদ্দিন ভূঁইয়া (লাঙ্গল), তৃণমূল বিএনপির মিজানুর রহমান খান (সোনালী আঁশ), ইসলামী ঐক্যজোটের এহতেশাম সারওয়ার (মিনার); নেত্রকোণা-৪ (মদন-মোহনগঞ্জ-খালিয়াজুরী) আসনের জাতীয় পার্টির লিয়াকত আলী খান (লাঙ্গল), জাসদের মুসফিকুর রহমান (মশাল), তৃণমূল বিএনপির আল মামুন (সোনালী আঁশ) এবং নেত্রকোণা-৫ (পূর্বধলা) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি ড. আনোয়ার হোসেন (ঈগল), জাতীয় পার্টির ওয়াহিদুজ্জামান আজাদ (লাঙ্গল) ও তৃণমূল বিএনপির আব্দুল ওয়াহহাব হামিদী (সোনালী আঁশ)।
গত রোববার (৭ জানুয়ারি) রাতে নেত্রকোণার জেলা প্রশাসক ও রিটানিং কর্মকর্তা শাহেদ পারভেজ ঘোষিত বেসরকারি ফলাফলের বরাতে জানা গেছে, নেত্রকোণা-১ আসনে ৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এ আসনে বৈধ ভোট পড়ে ১ লাখ ৮৭ হাজার ৫৮২টি। এতে প্রার্থীর জামানত রক্ষায় ২৩ হাজার ৪৪৭ ভোট পেতে হত। কিন্তু ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী আফতাব উদ্দিন পেয়েছেন ৩৬১ ভোট, বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের (ছড়ি) আহমদ শফী পেয়েছেন ৫৭৫ ভোট ও জাতীয় পার্টির (লাঙ্গল) গোলাম রব্বানী পেয়েছেন ২৪০৮ ভোট। আট ভাগের এক ভাগ ভোট না পাওয়ায় এই তিনজন জামানত হারিয়েছেন। অন্যদিকে এই আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোশতাক আহমেদ রুহী এক লাখ ৫৯ হাজার ১৯ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম স্বতন্ত্র প্রার্থী জান্নাতুল ফেরদৌস আরা ঝুমা তালুকদার (ট্রাক) প্রতীকে পান ২৫ হাজার ২১৯ ভোট।
নেত্রকোণা-২ আসনে মোট ৭ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এ আসনে বৈধ ভোট পড়ে ১ লাখ ৯৫ হাজার ৩৬টি। এতে প্রার্থীর জামানত রক্ষায় ২৪ হাজার ৯৭৯ ভোট পেতে হত। কিন্তু বিএনএম’র এবিএম রফিকুল হক তালুকদার (নোঙ্গর) পেয়েছেন ৩৮৫ ভোট, বাংলাদেশ কংগ্রেসের আজহারুল ইসলাম খান (ডাব) পেয়েছেন ২৮৮ ভোট, ইসলামী ঐক্যজোটের মো. ইলিয়াস (মিনার) পেয়েছেন ১৩৮৫ ভোট, জাতীয় পার্টির রহিমা আক্তার (লাঙ্গল) পেয়েছেন ৮৯৭ ভোট, স্বতন্ত্র প্রার্থী সুব্রত চন্দ্র সরকার (ট্রাক) পেয়েছেন ৪৪১ ভোট। ফলে আট ভাগের এক ভাগ ভোট না পাওয়ায় এই ৫ জন জামানত হারিয়েছেন। অন্যদিকে এই আসনে নৌকা প্রতীকের মো. আশরাফ আলী খান খসরু ১ লাখ ৫ হাজার ৩৫৩ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী এবং সাবেক যুব ও ক্রীড়া উপমন্ত্রী আরিফ খান জয় ঈগল প্রতীকে ৮৬ হাজার ২৮৭ ভোট পান।
নেত্রকোণা-৩ আসনে ৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এ আসনে বৈধ ভোট পড়ে ১ লাখ ৫৭ হাজার ৭১৪টি। এতে প্রার্থীর জামানত রক্ষায় ১৯ হাজার ৭১৪ ভোট পেতে হত। কিন্তু ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও সাবেক এমপি মঞ্জুর কাদের কোরাইশী পেয়েছেন ৫ হাজার ৪৬০ ভোট, তৃণমূল বিএনপির (সোনালী আঁশ) মিজানুর রহমান খান পেয়েছেন ৩২৭ ভোট, ইসলামী ঐক্যজোটের (মিনার) এহতেশাম সারওয়ার পেয়েছেন ২৮৪ ভোট, জাতীয় পর্টির (লাঙ্গল) জসীম উদ্দিন ভূঁইয়া পেয়েছেন ২৯০ ভোট। ফলে আট ভাগের এক ভাগ ভোট না পাওয়ায় এই ৪ জন জামানত হারিয়েছেন। অন্যদিকে ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী ইফতিকার উদ্দিন তালুকদার পিন্টু ৭৬ হাজার ৮০৩ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন। আর নৌকার প্রার্থী, বর্তমান এমপি ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল পেয়েছেন ৭৪ হাজার ৫৫০ ভোট।
নেত্রকোণা-৪ আসনে চারজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এ আসনে বৈধ ভোট পড়ে ১ লাখ ৯৬ হাজার ১৭৬টি। এতে প্রার্থীর জামানত রক্ষায় ২৪ হাজার ৫২২ ভোট পেতে হত। কিন্তু জাসদের (মশাল) মুসফিকুর রহমান পেয়েছেন ৬৩৪ ভোট, তৃণমূল বিএনপির আল মামুন পেয়েছেন ১৭১৫ ভোট, জাতীয় পার্টির (লাঙ্গল) লিয়াকত আলী খান পেয়েছেন ৫ হাজার ৭৫৯ ভোট। ফলে আট ভাগের এক ভাগ ভোট না পাওয়ায় এই তিনজন জামানত হারিয়েছেন। অন্যদিকে নৌকার প্রার্থী সাজ্জাদুল হাসান ১ লাখ ৮৮ হাজার ৬৮ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন।
নেত্রকোণা-৫ আসনে পাঁচজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এ আসনে বৈধ ভোট পড়ে ১ লাখ ১৫ হাজার ৩০টি। এতে প্রার্থীর জামানত রক্ষায় ১৪ হাজার ৩০ ভোট পেতে হত। কিন্তু তৃণমূল বিএনপির আব্দুল ওয়াহহাব হামিদী পেয়েছেন ৩৭২ ভোট, জাতীয় পার্টির (লাঙ্গল) ওয়াহিদুজ্জামান আজাদ পেয়েছেন ১ হাজার ৬০৬ ভোট, ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী আনোয়ার হোসেন পেয়েছেন ৬ হাজার ১৯১ ভোট। ফলে আট ভাগের এক ভাগ ভোট না পাওয়ায় ওই তিনজন জামানত হারিয়েছেন। অন্যদিকে নৌকার প্রার্থী আহমদ হোসেন ৭৯ হাজার ৬৪৭ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন।