শাহিনুর রহমান সোনা,রাজশাহী ব্যুরো
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী মো. আব্দুল ওয়াদুদ দারা বলেছেন, ‘পৃথিবীতে আপনি-আমি কেউ থাকবো না। তবে এই সমবায় সেক্টরটি নিয়ে যদি কিছু করে যেতে পারি সেটাই স্বার্থকতা। আপনারা সবাই মিলে মন্ত্রণালয়কে সহযোগিতা করেন। মন্ত্রণালয়ের অধীনে প্রকল্পের জায়গা সব দখলে নিতে হবে। সমবায় নিয়ে কীভাবে কোর্টে দৌঁড়াদৌঁড়ি বন্ধ করা যায় সেটি আমরা করতে চাই। আমরা সমবায় আইন সংস্কার করবো। যখন গণমানুষ থাকবে তখন আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা খুবই জরুরি। আমরা রূট পরিবর্তন করে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সমবায়কে একটি অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যেতে চাই।’
শনিবার (০১ জুন) দুপুরে রাজশাহী বিভাগীয় সমবায় কার্যালয়ে ‘বঙ্গবন্ধুর ভাবনায় সমবায়ভিত্তিক কৃষি : সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বিভাগীয় সমবায় কার্যালয়ের আয়োজনে অনুষ্ঠিত সেমিনারে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আগে আমরা দেশের প্রতিটি ওয়ার্ডে সমবায় চালু করতে চাই। এরপর আমরা প্রত্যেক গ্রামে সমবায়ভিত্তিক কার্যক্রম চালু করবো। আপনি-আমি আসেন চেষ্টা করি। ইনশায়াল্লাহ আমরা এক বছরের মধ্যে পরিবর্তন করে ফেলবো।’ তিনি আরো বলেন, ‘শুধু সমবায় আন্দোলনই না। সবক্ষেত্রেই আমরা যেন একটা সীমাবদ্ধ সীমার মধ্যে থেকে আইনের কাঠামোর মধ্যে থেকে দেশটাকে যেন কিছু দেয়ার চেষ্টা করি। তাহলে আর কোন হা-হুতাশ থাকবে না।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর পাঠশালা পরিকল্পনা ব্যতিত বাংলাদেশের মানুষের আর্থ-সামাজিক, রাজনৈতিক এবং প্রাতিষ্ঠানিক মুক্তি আসতে পারে না। তার বাইরে কোন তত্ত্ব কিংবা থিউরি নেই। বঙ্গবন্ধু এদেশের মাটি এবং মানুষকে নিয়েই জলবায়ু ও আবহাওয়ার প্রেক্ষাপট নিয়েই প্রথম পাঠশালা রচনা করেছিলেন। যার মধ্যে ছিল বাংলাদেশসহ উপমহাদেশের প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ, শিক্ষক, চিকিৎসকসহ বিভিন্ন পেশার মানুষের জন্য দিকনির্দেশনা।’
সেমিনারে বিশেষ অতিথি ছিলেন, সমবায় অধিদপ্তরের নিবন্ধক ও পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) মো. শরিফুল ইসলাম, রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার (অতিরিক্ত সচিব) ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর। রাজশাহী বিভাগীয় সমবায় কার্যালয়ের যুগ্মনিবন্ধক মো. মোখলেসুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে রাজশাহী রেঞ্জ পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি (অপারেশন) সাইফুল ইসলামসহ রাজশাহী বিভাগের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের সমবায় কর্মকর্তাবৃন্দ।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধে বঙ্গবন্ধুর সমবায়ভিত্তিক চাষাবাদ পদ্ধতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সমবায়ভিত্তিক কৃষি মডেল আলোচনা করা হয়। সমবায়ভিত্তিক কৃষির মূল ধারনা একটি মাঠের সকল জমি মালিকদের নিয়ে একটি সমবায় সমিতি হবে। জমির মালিকগণকে জমির অংশ অনুপাতে ফসল দেওয়া হবে। অনাবাদী জমি চাষের আওতায় আনা, সমন্বিতভাবে জমি চাষ, উন্নত কৃষি জমি ব্যবহার করার মাধ্যমে অধিক ফসল ফলিয়ে দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হবে।
সেমিনারে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে সমবায়ভিত্তিক কৃষি বাস্তবায়নের সম্ভাবনা ও বিদ্যমান চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা হয়। সেমিনারের শেষ পর্যায়ে প্রতিমন্ত্রী ‘উন্নত জাতের গাভী পালনের মাধ্যমে সুবিধাবঞ্চিত মহিলাদের জীবনযাত্রার মান’ শীর্ষক সমাপ্ত প্রকল্পের আবর্তক তহবিল হতে ৩৪ জন সুবিধাভোগীকে ১ লাখ টাকা করে ঋণের চেক বিতরণ করেন।