চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি
চাঁপাইনবাবগঞ্জের বিদেশ-ফেরত অভিবাসীদের পুনরেকত্রীকরণে ব্র্যাকের পাশাপাশি সরকারি ও বেসকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে সমন্বয় করে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার সমাজসেবা কর্মকর্তা কাঞ্চন কুমার দাস।
আজ মঙ্গলবার (৬ মে ২০২৫) ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের উদ্যোগে আয়োজিত উপজেলার ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সম্মেলন কক্ষে ‘নিরাপদ অভিবাসন ও বিদেশ-ফেরত অভিবাসীদের পুনরেকত্রীকরণ” শীর্ষক উপজেলা কর্মশালায় তিনি এ কথা বলেন। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ব্র্যাকের যৌথ সহযোগিতায় বাস্তবায়িত “প্রত্যাশা-২” প্রকল্পের আওতায় এই কর্মশালাটি অনুষ্ঠিত হয়। এতে উপজেলার সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধি, গণমাধ্যমকর্মীসহ বিভিন্ন অংশীজন অংশ নিয়েছেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে সমাজসেবা কর্মকর্তা কাঞ্চন কুমার বলেন, ‘অভিবাসন খাতকে নিরাপদ করার পাশাপাশি বিদেশ-ফেরতদের মর্যাদা নিশ্চিত করতে স্থানীয় পর্যায়ে সরকারি-বেসরকারি সংস্থাগুলোর মধ্যে কার্যকর সমন্বয় গড়া খুব জরুরি।’ তিনি আরও বলেন, ‘স্থানীয় পর্যায়ে এই কর্মশালা অভিবাসন ব্যবস্থাপনাকে আরও মানবিক ও সহায়ক করে তোলার কাজে অবদান রাখবে।’
আয়োজনের শুরুতে কর্মশালার উদ্দেশ্য তুলে ধরেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের এমআরএসসি কো-অর্ডিনেটর আশিকুজ্জামান। নিজের আলোচনায় তিনি প্রতারিত ও ক্ষতিগ্রস্ত অভিবাসীদের পক্ষে কাজ করার পাশপাশি বিদেশ-ফেরতদের মনোসামাজিক ও আইনগত সহায়তা দিতে কীভাবে প্রত্যাশা-২ প্রকল্পটি কাজ করছে তা সম্পর্কে উপস্থিত অংশীজনকে জানান। কর্মশালার মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করে আরএমসি কো-অর্ডিনেটর শামসুজ্জামান। আলোচনায় তিনি নিরাপদ অভিবাসনের চ্যালেঞ্জ, প্রকল্প পরিচিতি ও প্রকল্পের মাধ্যমে কীভাবে বিদেশ-ফেরতদের সম্মানজনক পুনরেকত্রীকরনে ব্র্যাক কাজ করছে তা তুলে ধরেন।
কর্মশালার সভাপতিত্ব করেন ব্র্যাকের জেলা সমন্বয়কারী মোমেনা খাতুন। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রবাসবন্ধু ফোরাম সভাপতি সাবেক প্যানেল মেয়র নাজনীন ফাতেমা, উপজেলা আনসার ভিডিপি কর্মকর্তা তাজিনুর ইসলাম, উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা ওমর ফারুক, উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার দুরুল হুদা, উপজেলা প্রকল্প ব্যবস্থাপক আনিসুর রহমানসহ আরও অনেকে।
উল্লেখ্য, ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের প্রত্যাশা-২ প্রকল্পের আওতায় ২০২০ সালের ১ এপ্রিল বা তার পরবর্তী সময়ে বিদেশ-ফেরত ক্ষতিগ্রস্ত অভিবাসীদের দেশের ১৫টি মাইগ্রেশন অ্যান্ড রিইন্ট্রিগ্রেশন সাপোর্ট সেন্টারের মাধ্যমে নানামুখী পুনরেকত্রীকরণ সেবা দেওয়া হচ্ছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ব্র্যাকের যৌথ অর্থায়নে ইমপ্রুভড সাসটেইনেবল রিইন্ট্রিগ্রেশন অব বাংলাদেশি রিটার্নি মাইগ্রেন্টস (প্রত্যাশা-২) প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হচ্ছে। বিশ্বের সর্ববৃহৎ উন্নয়ন সংস্থা এবং সারাবিশ্বের শীর্ষস্থানীয় এনজিও- ব্র্যাক, ১৯৭২ সালের প্রতিষ্ঠাকালীন সময় থেকে দেশে ও দেশের বাইরে নানাবিধ কর্মসূচি বাস্তবায়নের মাধ্যমে মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে। ব্র্যাকের বিভিন্ন কর্মসূচিগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য একটি কর্মসূচি হল মাইগ্রেশন প্রোগ্রাম। ব্র্যাকের এই প্রোগ্রাম ২০০৬ সাল থেকে দেশের অভিবাসনপ্রবণ জেলাসমূহে বিদেশগামী নারী ও পুরুষের মাঝে সঠিক তথ্যের মাধ্যমে নিরাপদ অভিবাসন বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধিমূলক কার্যক্রম, বিদেশ-ফেরতদের পুনরেকত্রীকরণ, প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ, অভিবাসন খাতে অ্যাডভোকেসি ও নানাবিধ সহযোগিতামূলক কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে আসছে।