News Desk
আমরা চাই, নির্বাচনটা উৎসবমুখর পরিবেশে হোক। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে, একপক্ষ নির্বাচনের আমেজে আছে, আরেক পক্ষ মাঠেই নেই। এভাবে তো জমে না।"- কথাগুলো বলছিলেন যশোর-৩ আসনের ভোটার জহিরুল ইসলাম। বিয়াল্লিশ বছর বয়সী মিস্টার ইসলাম স্থানীয় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরী করেন। এবারের নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে জানতে চাইলে তিনি আক্ষেপ করে বলেন, “আগে আমরা দেখতাম যে, নির্বাচন আসলে ঈদের মতন একটা আনন্দ বিরাজ করতো। কিন্তু সেরকম পরিবেশ এখন দেখি না। সব দল নির্বাচনে অংশ নিলেই তখন উৎসবের আমেজটা আসবে।” আগামী ৭ই জানুয়ারি বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণের তারিখ ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। নির্ধারিত সময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠানে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন। কিন্তু দেশটির অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপি নির্বাচনে না থাকায় মাঠ পর্যায়ে এখন পর্যন্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচনের কোন আমেজ দেখা যাচ্ছে না। ফলে নির্বাচন নিয়ে ভোটারদের মধ্যে খুব একটা আগ্রহ লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। “ধরেন আমরা এখানে দশটা লোক বসে আছি পাঁচ দলের। সবাই যদি ইলেকশন করতো, তাহলে সবার মনে একটা হাসিখুশি ভাব থাকতো। এখন আপনি একা ইলেকশন করতিছেন, তাইলে আমরা তো সব বোবা” - বলছিলেন ইউনুস আলী, যিনি পেশায় একজন কৃষক। আর সংস্কৃতিকর্মী মশিউর রহমান বলেন, “নির্বাচন মানেই একটা উৎসবের ব্যাপার। সব দলের অংশগ্রহণ থাকলে এর সৌন্দর্য আরও বৃদ্ধি পায়। কাজেই সব দল যদি এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে, তখন ভোটাররা ভোট দিতে আগ্রহী হবে বলে আমি মনে করি।” তবে অতীত অভিজ্ঞতা ভালো না হওয়ায় নির্বাচন নিয়ে অনেকের মধ্যে আতঙ্কও বিরাজ করছে, বিশেষ করে শ্রমজীবী মানুষের মধ্যে। পরিবহন শ্রমিক জাকির হোসেন বলেন, “নির্বাচন আসলেই হরতাল-অবরোধ শুরু হয়। আমাদের রুটি-রুজির ক্ষতি হয়। কাজেই যত তাড়াতাড়ি নির্বাচন হয়ে যায় ততই আমাদের জন্য মঙ্গল।” গত ১৫ই নভেম্বর সন্ধ্যায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন। এর পরপরই তফসিল প্রত্যাখ্যান করে বিবৃতি দেয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন করতে থাকা বিএনপি। তখন দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এক ভার্চুয়াল ব্রিফিংয়ে বলেছিলেন, “প্রধান নির্বাচন কমিশনার তার ভাষণে বলেছেন, অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন করবেন। এটা ডাহা মিথ্যা, ভন্ডামিপূর্ণ ও মেকি। শেখ হাসিনার অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন বিশ্বাস করা চোরাবালিতে পড়ার সামিল।” নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে বিএনপির পাশে থাকা লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি), জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি), বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি), গণফোরাম সহ আরও বেশ কয়েকটি দলও নির্বাচনের তফসিল প্রত্যাখ্যান করে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা দেয়। বিএনপি ও তাদের সমমনা দলগুলো নির্বাচনে অংশ না নিলেও ঘোষিত সময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠানে প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন। প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা বাজেটের এই নির্বাচনে ১১ কোটি ৯৬ লাখ ৯২ হাজারের কিছু বেশি ভোটার ভোট দিতে পারবেন। এ উপলক্ষ্যে দেশের ৩০০ সংসদীয় আসনের ৪২ হাজারেরও বেশি ভোটকেন্দ্র প্রস্তুত করছে নির্বাচন কমিশন। মাঠপর্যায়ে যেমন পরিবেশ দেখা গেছে নির্বাচন কমিশনের মাঠ পর্যায়ের প্রস্তুতি এবং ভোটের পরিবেশ দেখতে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলা যশোরে গিয়েছিল বিবিসির একজন সংবাদদাতা। জেলার ছয়টি সংসদীয় আসনে ইতিমধ্যেই পৌঁছে গেছে ব্যালট বক্স। এখন চলছে জনবল প্রস্তুত এবং কেন্দ্রের চূড়ান্ত তালিকা তৈরির কাজ। যশোরের জেলা প্রশাসক মো. আবরাউল হাছান মজুমদার বিবিসিকে বলেন, “ব্যালট বক্স এবং এর লক সিল সহ বেশকিছু নির্বাচনী সরঞ্জাম আমরা পেয়েছি। নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুসারে, সেগুলো আমরা নিরাপদ জায়গায় সংরক্ষণ করেছি। এছাড়া আমাদেরকে ভোট গ্রহণকারী কর্মকর্তা এবং কেন্দ্রে তালিকা চূড়ান্ত করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।” “ভোট গ্রহণকারী কর্মকর্তাদের তালিকা চেয়ে আমরা ইতিমধ্যেই বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের চিঠি দিয়েছি। দ্রুত তালিকা প্রস্তুত করে তারা আমাদের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তাদের কাছে পাঠাবেন।” যশোরের প্রায় ২৩ লাখ ৩৯ হাজার ভোটারের জন্য প্রাথমিকভাবে ৫২৫টি কেন্দ্রের তালিকা প্রস্তুত করেছিল নির্বাচন কমিশন। “ইতিমধ্যেই আমাদের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তারা কেন্দ্রগুলো পরিদর্শন করে ফেলেছেন। সেগুলোর মধ্যে কোনটির যদি যাতাযাতের পথ এবং ভবনে মেরামতের প্রয়োজন হয়, সেটি করার জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”-বলেন মিস্টার মজুমদার। যশোরে নির্বাচনের মাঠে এখন পর্যন্ত কেবল আওয়ামী লীগকেই দেখা যাচ্ছে। দলটির অর্ধশতাধিক নেতা এবার মনোয়নপত্র কিনেছেন।তাদের পক্ষে ভোট চেয়ে বিভিন্ন জায়গায় যেমন মিটিং-মিছিল হতে দেখা গেছে এছাড়া আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঠিক রাখার জন্য যে ধরনের পরিকল্পনা করা প্রয়োজন, সেটি গ্রহণ করার জন্যও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে বলা হয়েছে। নির্বাচন কমিশনার বলেন, “স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাদের বিভিন্ন বিভাগের সাথে মিটিং করে আমাদের কাছে পরিপত্র পাঠাবেন, সেটি আমরা ভেটিং করে দিলে, তারা সে অনুযায়ী নির্দেশনা জারি করবে।” তফসিল অনুযায়ী, আগামী ১৮ই ডিসেম্বর প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দ দিবে নির্বাচন কমিশন। এরপর শুরু হবে ব্যালট পেপার ছাপানোর কাজ শুরু হবে। নির্বাচনের কয়েক দিন আগেই সেগুলো জেলা পর্যায়ে পাঠানো হবে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন। তবে ব্যালট পেপারগুলো ভোটগ্রহণের দিন সকালে নাকি আগে ভোটকেন্দ্রে পৌঁছানো হবে, এ বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত নেয়নি কমিশন।
ফলে নির্বাচন নিয়ে ভোটারদের মধ্যে খুব একটা আগ্রহ লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। “ধরেন আমরা এখানে দশটা লোক বসে আছি পাঁচ দলের। সবাই যদি ইলেকশন করতো, তাহলে সবার মনে একটা হাসিখুশি ভাব থাকতো। এখন আপনি একা ইলেকশন করতিছেন, তাইলে আমরা তো সব বোবা” - বলছিলেন ইউনুস আলী, যিনি পেশায় একজন কৃষক। আর সংস্কৃতিকর্মী মশিউর রহমান বলেন, “নির্বাচন মানেই একটা উৎসবের ব্যাপার। সব দলের অংশগ্রহণ থাকলে এর সৌন্দর্য আরও বৃদ্ধি পায়। কাজেই সব দল যদি এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে, তখন ভোটাররা ভোট দিতে আগ্রহী হবে বলে আমি মনে করি।” তবে অতীত অভিজ্ঞতা ভালো না হওয়ায় নির্বাচন নিয়ে অনেকের মধ্যে আতঙ্কও বিরাজ করছে, বিশেষ করে শ্রমজীবী মানুষের মধ্যে। পরিবহন শ্রমিক জাকির হোসেন বলেন, “নির্বাচন আসলেই হরতাল-অবরোধ শুরু হয়। আমাদের রুটি-রুজির ক্ষতি হয়। কাজেই যত তাড়াতাড়ি নির্বাচন হয়ে যায় ততই আমাদের জন্য মঙ্গল।” গত ১৫ই নভেম্বর সন্ধ্যায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন। এর পরপরই তফসিল প্রত্যাখ্যান করে বিবৃতি দেয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন করতে থাকা বিএনপি। তখন দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এক ভার্চুয়াল ব্রিফিংয়ে বলেছিলেন, “প্রধান নির্বাচন কমিশনার তার ভাষণে বলেছেন, অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন করবেন। এটা ডাহা মিথ্যা, ভন্ডামিপূর্ণ ও মেকি। শেখ হাসিনার অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন বিশ্বাস করা চোরাবালিতে পড়ার সামিল।” নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে বিএনপির পাশে থাকা লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি), জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি), বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি), গণফোরাম সহ আরও বেশ কয়েকটি দলও নির্বাচনের তফসিল প্রত্যাখ্যান করে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা দেয়। বিএনপি ও তাদের সমমনা দলগুলো নির্বাচনে অংশ না নিলেও ঘোষিত সময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠানে প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন। প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা বাজেটের এই নির্বাচনে ১১ কোটি ৯৬ লাখ ৯২ হাজারের কিছু বেশি ভোটার ভোট দিতে পারবেন। এ উপলক্ষ্যে দেশের ৩০০ সংসদীয় আসনের ৪২ হাজারেরও বেশি ভোটকেন্দ্র প্রস্তুত করছে নির্বাচন কমিশন। মাঠপর্যায়ে যেমন পরিবেশ দেখা গেছে নির্বাচন কমিশনের মাঠ পর্যায়ের প্রস্তুতি এবং ভোটের পরিবেশ দেখতে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলা যশোরে গিয়েছিল বিবিসির একজন সংবাদদাতা। জেলার ছয়টি সংসদীয় আসনে ইতিমধ্যেই পৌঁছে গেছে ব্যালট বক্স। এখন চলছে জনবল প্রস্তুত এবং কেন্দ্রের চূড়ান্ত তালিকা তৈরির কাজ। যশোরের জেলা প্রশাসক মো. আবরাউল হাছান মজুমদার বিবিসিকে বলেন, “ব্যালট বক্স এবং এর লক সিল সহ বেশকিছু নির্বাচনী সরঞ্জাম আমরা পেয়েছি। নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুসারে, সেগুলো আমরা নিরাপদ জায়গায় সংরক্ষণ করেছি। এছাড়া আমাদেরকে ভোট গ্রহণকারী কর্মকর্তা এবং কেন্দ্রে তালিকা চূড়ান্ত করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।” “ভোট গ্রহণকারী কর্মকর্তাদের তালিকা চেয়ে আমরা ইতিমধ্যেই বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের চিঠি দিয়েছি। দ্রুত তালিকা প্রস্তুত করে তারা আমাদের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তাদের কাছে পাঠাবেন।” যশোরের প্রায় ২৩ লাখ ৩৯ হাজার ভোটারের জন্য প্রাথমিকভাবে ৫২৫টি কেন্দ্রের তালিকা প্রস্তুত করেছিল নির্বাচন কমিশন। “ইতিমধ্যেই আমাদের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তারা কেন্দ্রগুলো পরিদর্শন করে ফেলেছেন। সেগুলোর মধ্যে কোনটির যদি যাতাযাতের পথ এবং ভবনে মেরামতের প্রয়োজন হয়, সেটি করার জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”-বলেন মিস্টার মজুমদার। যশোরে নির্বাচনের মাঠে এখন পর্যন্ত কেবল আওয়ামী লীগকেই দেখা যাচ্ছে। দলটির অর্ধশতাধিক নেতা এবার মনোয়নপত্র কিনেছেন।তাদের পক্ষে ভোট চেয়ে বিভিন্ন জায়গায় যেমন মিটিং-মিছিল হতে দেখা গেছে এছাড়া আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঠিক রাখার জন্য যে ধরনের পরিকল্পনা করা প্রয়োজন, সেটি গ্রহণ করার জন্যও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে বলা হয়েছে। নির্বাচন কমিশনার বলেন, “স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাদের বিভিন্ন বিভাগের সাথে মিটিং করে আমাদের কাছে পরিপত্র পাঠাবেন, সেটি আমরা ভেটিং করে দিলে, তারা সে অনুযায়ী নির্দেশনা জারি করবে।” তফসিল অনুযায়ী, আগামী ১৮ই ডিসেম্বর প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দ দিবে নির্বাচন কমিশন। এরপর শুরু হবে ব্যালট পেপার ছাপানোর কাজ শুরু হবে। নির্বাচনের কয়েক দিন আগেই সেগুলো জেলা পর্যায়ে পাঠানো হবে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন। তবে ব্যালট পেপারগুলো ভোটগ্রহণের দিন সকালে নাকি আগে ভোটকেন্দ্রে পৌঁছানো হবে, এ বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত নেয়নি কমিশন।