নওগাঁ প্রতিনিধি
নওগাঁর মান্দায় নৌকার মনোনিত সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমান উজ্জলের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিভিন্ন অভিযোগের দায়ে সম্প্রতি তিনি ৩নং পরানপুর ইউনিয়ন পরিষদ থেকে পদত্যাগের মাধ্যমে অব্যহতি গ্রহণ করেছেন।
জানাগেছে, তিনি বিভিন্ন প্রকল্প কাজে অনিয়ম-দূর্নীতির করে আসছেন। এসব অনিয়মের অভিযোগে গত (২২ আগষ্ট) বৃহস্পতিবার বেলা ১২টার দিকে জনগণের তোপের মুখে তিনি নিজে গ্রাম পুলিশের মাধ্যমে ইউএনও দপ্তরে পদত্যাগ পত্র পাঠান। এসময় সাবেক চেয়ারম্যান নিজেও উপস্থিত ছিলেন। ইউএনও লায়লা আঞ্জুমান বানু পদত্যাগ পত্রটি ফরওয়ার্ড করে জেলা প্রশাসক বরাবর প্রেরণ করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ইউপি সদস্য জানান, ইউনিয়ন পরিষদ সংস্কার কাজের জন্য প্রায় ১০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। সেই সংস্কার কাজ ঠিকাদারের নিকট থেকে মাত্র ২ লক্ষ টাকা দিয়ে ক্রয় করেন।এরপর মাত্র এক লক্ষ টাকা ব্যয়ে শুধুমাত্র রঙের কাজ করে সমুদয় টাকা আত্মসাৎ করেন। এ ছাড়া এলজিএসপির বরাদ্দকৃত অর্থের কোনো কাজ না করে অর্থ আত্মসাৎ করেন তিনি। খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ১৫ টাকা কেজির চাল চেয়ারম্যান উজ্জল তার নিজস্ব লোকদের দিয়ে কিনে পরে বেশি দামে বাজারে বিক্রি করেন। এ ছাড়া টিসিবি ও ভিজিডির চাল বিতরণ ক্ষেত্রেও ব্যাপক অনিময় করেন এই চেয়ারম্যান।
আরো জানা গেছে, এডিপি, টিআর ও কাবিখা প্রকল্পের অনুকুলে বরাদ্দকৃত অর্থও নয়ছয় করা হয়েছে। হোল্ডিং ট্যাক্স ও ট্রেড লাইসেন্স হতে প্রাপ্ত অর্থ ব্যাংকে জমা না দিয়ে আত্মসাৎ করেন চেয়ারম্যান। পরানপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৮নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য কামরুজ্জামান সরদার বলেন, ‘গোপালপুর হাটের উন্নয়নের জন্য ৮ লাখ টাকা ৮২ হাজার টাকা বরাদ্দ পাওয়া যায়। কাজ না পুরানো সেডে চুনকাম ও দুই বস্তা সিমেন্ট গোলা দিয়ে মেঝের কাজ করে সমুদয় অর্থ লুটপাট করেছেন।হাটের সিসি ক্যামেরা স্থাপন ও ড্রেন নির্মাণ প্রকল্পে আমাকে সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়। এ দুটি প্রকল্পে বরাদ্দ ছিল ৪ লাখ টাকা। সিসি ক্যামেরা স্থাপনের কাজ সমাপ্ত হলেও ড্রেন নির্মাণ কাজটি এখন পর্যন্ত করা হয়নি। অথচ দুটি প্রকল্পের বরাদ্দকৃত টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। অবশিষ্ট ৪ লাখ ৮২ হাজার টাকারও কোনো হদিস নেই।
এ প্রসঙ্গে পরানপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমান উজ্জল বলেন,হাট বাজার উন্নয়ন কাজে কোন অনিয়ম হয়নি । কাজগুলো আমি শুধু দেখভাল করেছি। ওই প্রকল্পগুলোর পিআইসি আমি না। এছাড়া ইউনিয়ন পরিষদ সংস্কার কাজ ঠিকাদার নিজে করেছেন । এর সাথেও আমি জড়িত না।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লায়লা আঞ্জুমান বানু বলেন, এবিষয়ে আমি কোন অভিযোগ পাইনি অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।