শিবগঞ্জ প্রতিনিধি
চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে পাওনা টাকা চাওয়ায় প্রাণনাশের হুমকি দেয়ার অভিযোগ উঠেছে এক ভুক্তভোগী পরিবারকে।শুধু তাই নয় পরে ভুক্তোভোগীর বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাংচুরের পর উল্টো তাকে হুন্ডি ব্যবসায়ী দাবী করে সংবাদ সম্মেলন করে ঘটনা ভিন্নখাতে প্রবাহের অভিযোগও রয়েছে অভিযুক্ত ব্যক্তি ও তার অনুসারীদের বিরুদ্ধে। সোমবার বেলা ১১টায় শিবগঞ্জ বাজারের একটি অফিসে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানা গেছে।
ভুক্তভোগী ব্যক্তি চককীর্তি ইউনিয়নের গৌরিসংকরপুর এলাকার এন্তাজ আলীর ছেলে মোতাহার হোসেন।
লিখিত বক্তব্যে ভুক্তভোগী মোতাহার হোসেন বলেন, তিন বছর আগে ডাচ বাংলা এজেন্ট ব্যাংকিয়ের ৫০ শতাংশ শেয়ারের জন্য বিদেশে চাকুরি করতে যাবার কয়েকদিন আগে মোফাত খাইরুল ইসলামকে জমি বিক্রির ১০ লাখ টাকা ব্যবসা করার জন্য দেন। প্রবাসে থাকাকলীন পরে আরো ২ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন তিনি। এক পর্যায়ে তিনি জানতে পারেন মোফাত খাইরুল ইসলাম হুন্ডির ব্যবসার সাথে জড়িত। বিষয়টি জানার পর তার কাছ থেকে টাকা ফেরত চাইলে বিভিন্ন টালবাহানা করতে থাকে। বিদেশ থেকে এসে তাকে চাপ দিলে পরে দুই দফায় ৭ লাখ ৯০ হাজার টাকা ফেরত দেয়। কিন্তু বাকি টাকা চাইতে গেলে প্রাণনাশের হুমকি দেয় এবং এর কয়েক দিন পর তার বাড়িতে হামলা করে।
এ নিয়ে তিনি শিবগঞ্জ থানায় একটি অভিযোগও দায়ের করেন যা তদান্তধীন।
ভুক্তভোগী মোতাহার হোসেন আরও বলেন, তিনি মানবপাচার বা হুন্ডি ব্যবসার সাথে জড়িত নন। আর গত শনিবার যারা সংবাদ সম্মেলন করেছে তারা তাকে চিনেনা বলেও সংবাদ সম্মেলনে তারা নিজেরায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে জানিয়েছেল। তাই তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো ভিত্তিহীন।
তিনি ও তার পরিবার চককীর্ত্তিতে একা বাস করায় এবং অভিযুক্তরা একটি সংঘবদ্ধ চক্র হওয়ায় আবারো তিনি হামলার আশংকা করছেন এবং টাকা ফেরত সহ আসামীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। এ সময় ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
এ ব্যপারে মোফাত খাইরুল ইসলামের সাথে যোগোযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। তবে শনিবার চককীর্তি বাজারে তার পক্ষে সংবাদ সম্মেলন আয়োজনকারী মোফাত খাইরুল ইসলামের এজেন্ট ব্যাংক ডাচ বাংলা এজেন্ট ব্যাংকের কর্মচারী মো: কামাল উদ্দিন দাবী করেন, মোতাহার হোসেনের সঙ্গে পরিচিতির সুবাদে বিদেশ থেকে আর্থিক সহায়তার দেবার প্রলোভন দেখিয়ে ২০২২ সালে মোফাত খাইরুল ইসলামের ও আমার ব্যাংক একাউন্ট নম্বর চায়। একইভাবে ঐ গ্রামের ৮ অসহায় ব্যক্তির ব্যাংক একাউন্ট নম্বর নিয়ে চেক সংগ্রহ করেন মোতাহার হোসেন। পরে ২০২৩ সালের এপ্রিল পর্যন্ত ৮টি একাউন্টে প্রায় ১০ কোটি টাকা লেনদেন করেন তিনি। মানবপাচার করে কাজ পাইয়ে দিতে প্রতারণার ফাঁদ পেতে বাড়তি অর্থ সংগ্রহ করা তার মূল উদ্দেশ্যে। পরবর্তীতে সব টাকা উত্তোলন করেন মোতাহার। এতে আমিসহ ৮ জন ব্যক্তি বিপাকে পড়লে প্রতারণার বিষয়টি জানাজানি হয়।তবে ডাচ বাংলা ব্যাংকের শেয়ার ক্রয়ের কারনে আর্থিক লেনদেনের বিষয়টি অস্বীকার করেন তিনি।
অন্যদিকে শিবগঞ্জ থানার ওসি গোলাম কিবরিয়া বাড়িতে হামলা সংক্রান্ত একটি অভিযোগ পাবার সত্যতা স্বীকার করেন।
তিনি বলেন, অভিযোগকারী ও অভিযুক্ত ব্যক্তি একই গ্রামের পূর্বপরিচিত হওয়ায় তারা বিষয়টি স্থানীয়ভাবে মিমাংসা করতে সম্মত হয়েছে। পাশাপাশি তার অভিযোগটিও তদন্তাধীন।