চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি
জন্মস্থান চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমাস্তাপুর উপজেলার নয়াদিয়াড়ী , ছোট থেকে বড় নানার বাড়ী শিবগঞ্জের চককীত্তি ইউনিয়নের গৌরী শংকরপুর গ্রামে । এক সময় দিন মজুরী করতেন। দিন মুজরী করতে করতে ২০০৮ সালে নানির জমি বিক্রি করে পাড়ি জমান দুবাইয়ে বেশ কয়েক বছর কষ্টে কাটে তার, কিন্তু হঠাৎই ২০২১ সালে আলাদিনের চেরাগের গল্পের মত, বনে যান কোটিপতি। বলছিলাম গৌরী শংকরপুর গ্রামের মোঃ এন্তাজুল হকের ছেলে মোতাহার হোসেনের কথা।
মোতাহার হোসেন প্রবাসে থাকেন ১৬ বছর কিন্তু ১৩/১৪ বছরেও তেমন কোন দৃশ্যমান আয় ছিলনা তার, ২০২০ সালে শুরু করেন অবৈধ হুন্ডি ব্যবসা, ও মানব পাচার, আর এই থেকেই আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ মোতাহার হোসেনের, তবে ধৃত মোতাহার হোসেন যে ব্যাংক একাউন্ট গুলোকে ব্যবহার করেছেন সেগুলো একটিও তার নয়, এলাকার নিরীহ মানুষের একাউন্ট ব্যবহার করে অবৈধ হুন্ডি ও মানব পাচারের মাধ্যমে, লেনদেন করেছেন কোটি কোটি টাকা আর এতেই ফেঁসেছেন ঐ এলাকার দশ জন সাধারণ মানুষ।
মামলার শিকার ভুক্তভোগী কামাল উদ্দিন জানান, ২০২২ সালে হামিম ও সুমনের মাধ্যমে মোতাহারের সাথে যোগাযোগ হয় মোতাহার আমাকে বলে তোমার একাউন্টে কিছু টাকা যাবে টাকা গুলো উঠিয়ে আমাকে দিবা তোমার সময় না হলে তোমার চেকবই গুলা তুমি দিয়ে দাও আমি তাকে বিশ্বাস করে আমার চেক বইটি দিয়ে দিয়েছি সাথে আঙ্গুলের ছাপ দিয়ে অনেকবার টাকা উঠিয়ে দিয়েছি । ১ বছরে আমার একাউন্টে প্রায় ১০ কোটি টাকা লেনদেন করেছে । এই অবৈধ লেনদেনের কারণে আমার উপর মামলা করেছে মানব পাচারের এবং আমি ৮ মাস জেল হাজতে থাকি জেল থেকে মুক্তি পেয়ে মামলার কথা, মোতাহারকে বলতে গেলে মোতাহার আমাকে মারধর করে আবার আমার উপর ডাকাতের মামলা করেন, সুষ্ঠ তদন্ত করে মোতাহারের বিচার দাবি করছি।
ভুক্তভোগী ওমর আলী জানান, মোতাহার আমাদের বন্ধুত্বের ও অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে আমাদের সাথে প্রতারণা করেছে । ২০২০ সালে ছুটিতে বাড়ি আসে মোতাহার, এসে আমাকে দিয়ে ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট চককীত্তি শাখায় একটি একাউন্ট করায় একাউন্ট করিয়ে আমার কাছ থেকে চেকবই নিয়ে একাউন্ট ব্যবহার করে, দশ কোটি টাকা লেনদেন করে, লেনদেন করায় আমার নামে মাদারীপুর কোর্টে মানব পাচার মামলা করেছে আমি একের পর এক মামলায় আসামি হচ্ছি , মোতাহার হোসেনকে মামলার কথা বলতে গেলে সে আমাকে মারধর করে এবং শিবগঞ্জ থানায় ডাকাতের মামলা দিয়ে দেয় , মোতাহার একজন প্রতারক তার সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি।
আরেক ভুক্তভোগী মোফাত খাইরুল ইসলাম বাবু বলেন, আমি আর মোতাহার খুব ভালো বন্ধু, ছোট থেকে একসাথে বড় হয়েছি, সেই সুবাদে মোতাহার হোসেন আমার একাউন্টে , তিন কোটি টাকা লেনদেন করেন, লেনদেন করায় আমার নামে, ঢাকা মোহাম্মদুর ও মাদারীপুর থেকে দুইটি মামলা হয় আমি পরবর্তিতে প্রশাসনের মাধ্যমে আপোষ মিমাংসা হওয়ায় মামলা থেকে মুক্তি পায় , মোতাহার একজন প্রতারক আমি সহ এলাকার অনেক যুবকের সরলতার সুযোগ নিয়ে বিভিন্ন মামলায় ফাঁসিয়েছেন মোতাহার।
চককীর্তি ইউনিয়ন পরিষদের তিন নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্যরা আসগার আলী বলেন, মোতাহার এই নিরীহ ছেলেগুলোর একাউন্ট ব্যবহার করে ফাঁসিয়ে দিয়েছে , এ সমস্যা সমাধানের জন্য দফায় দফায় কয়েকবার বসা হলেও আজ পর্যন্ত সমাধান হয়নি, বিপদের মধ্যে পড়ে ভালো ছেলেগুলো আজ অসহায় এই সমস্যার দ্রুত সমাধান হওয়া উচিত ।
চককীত্তি ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মোফাক্ষারুর ইসলাম খাইরুল বলেন, বিষয় গুলো সমাধানের লক্ষ্যে উভয় পক্ষের মধ্যে আপোষ মিমাংসার জন্য তিন দফা সালিশী বৈঠক করেছি সালিশে মোতাহার হোসেন সবকিছু স্বীকার করেন, সালিশ শেষে মোতাহার হোসেন সালিশ না মেনে প্রত্যাখ্যান করেন।
এই বিষয়ে মোতাহার হোসেনের সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করার করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি, এবং তার মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।