নিউজ ডেস্ক
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় পানিতে ডুবে মৃত্যুর ঘটনা বাড়ছে। শনিবারসহ গত ২১ দিনে জেলায় নদীর পানিতে ডুবে ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে বেশির ভাগই শিশু। বিষয়টিকে উদ্বেগজনক উল্লেখ করে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এ নিয়ে প্রচার-প্রচারণাসহ সচেতনতামূলক কার্যক্রম চালানো প্রয়োজন।
পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, গত ২৮ এপ্রিল থেকে ১৮ মে পর্যন্ত ২১ দিনে জেলায় পানিতে ডুবে মারা যাওয়া ৮ জনের মধ্যে ৬ শিশু রয়েছে। বাকি দুজনের একজন কিশোরী, অপরজন যুবক। সবচেয়ে বেশি মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে মহানন্দা নদীতে।
সংশ্লিদের মতে, সাঁতার না জানা ও অসাবধানতার কারণেই মৃত্যু হচ্ছে শিশুদের। এক্ষেত্রে সচেতন হওয়ার কোনো বিকল্প নেই। মৃত্যুর ঘটনা পর্যালোচনা করলে দেখা যায়- শিশুদের বেশিরভাগই ডুবে মারা গেছে সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টার মধ্যে। যে সময় পরিবারের সদস্যরা, বিশেষ করে মায়েরা সাংসারিক কাজে ব্যস্ত থাকেন। এ সময়টাতে শিশুদের দেখভাল করার বা নজর রাখার মতোও কেউ থাকেন না।
শনিবার চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর ও ভোলাহাটে মহানন্দা নদীতে ডুবে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে সদর উপাজেলার মহানন্দা নদীর রাবারড্যাম এলাকায় ডুবে মারা যায় রাইহান আলী শুভ নামে এক কলেজছাত্র। তিনি পৌর এলাকার স্বরূপনগর মহল্লার জিকেন আলীর ছেলে এবং শাহনেয়ামতুল্লাহ কলেজে ডিগ্রি পাস কোর্সের অধীনে বিএ দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন। একইদিন দুপুরে ভোলাহাটের বজরাটেক মুন্সিগঞ্জে মহানন্দা নদীতে গোসল করতে গিয়ে ডুবে মারা যায় কিশোরী সোনিয়া খাতুন। তিনি একই উপজেলার দলদলী ইউনিয়নের পীরগাছি গ্রামের জোহর আলীর মেয়ে।
এর আগে গত শুক্রবার গোমস্তাপুরে পুকুরে ডুবে দুই শিশুর মৃত্যু হয়। মৃতরা হলো- মোমিনপাড়ার দাউদ আলীর ছেলে ফাহিম আলী ও মফিজুল হকের মেয়ে ফারহানা খাতুন। তারা আপন চাচাতো ভাই-বোন।
১৬ মে সদর উজেলায় সদর উপজেলায় পালশা এলাকায় মহানন্দায় ডুবে মারা যায় আব্দুল্লাহ আল মুকিম নামে আরেক শিশু। গত ২৯ এপ্রিল শিবগঞ্জ উপজেলার ধাইনগর-নাককাটিতলা এলাকায় মহানন্দা নদীতে ডুবে দুই শিশুর মৃত্যু হয়। মৃতরা হলো– শিবগঞ্জ উপজেলার বামুনগাঁ এলাকার রাসেল আলীর ছেলে শাকিল আহমেদ ও পীরগাছি এলাকার আলমগীর হোসেনের মেয়ে মারিয়া খাতুন। তারা দুজনই স্থানীয় নাককাটিতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।
তার আগের দিন অর্থাৎ ২৮ এপ্রিল শিবগঞ্জের রাণীবাড়ি-চাঁদপুরে মহানন্দা নদীতে ডুবে আরেক শিশুর মৃত্যু হয়। পানিতে ডুবে শিশুমৃত্যু রোধে পারিবারিক পর্যায়ে সচেতনতা তৈরি এবং সরকারি কর্মসূচি গ্রহণ প্রয়োজন বলে মনে করেন অনেকেই।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের স্টেশন অফিসার ফরিদ উদ্দীন বলেন, ‘গতমাসের শেষ ও চলতি মাসের শুরুতে হঠাৎ করেই পানিতে ডুবে মৃত্যুর ঘটনা বেড়ে গেছে। যেটা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এ জন্য অভিভাবকদের সতর্ক হতে হবে। সাঁতার না জানলে শিশুদের নদীতে যেতে দেওয়া উচিত নয় বলেও মনে করেন তিনি।