গোমস্তাপুর প্রতিনিধি
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা তো বটে বিভাগের অন্যতম রহনপুর হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল। প্রতিষ্ঠানটির প্রাক্তন অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) ডা মফিজউদ্দীন নিজ স্বার্থসিদ্ধ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অভিযোগের ভিত্তিতে কলেজ কর্তৃপক্ষক ঐতিহ্যবাহী হোমিও কলেজ রক্ষার্থে র্যালী, প্রতিবাদ সভা ও স্মারকলিপি প্রদান কর্মসূচি পালন করেছে।
রবিবার (০১ সেপ্টেম্বর) সকালে ওই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক,কর্মকর্তা- কর্মচারী ও শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ র্যালী বের করে। র্যালীটি কলেজ চত্বর থেকে বের করে রহনপুরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ের সামনে এসে শেষ করে। সেখানে প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য দেন রহনপুর হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ডা. হাবীবুল্লাহ, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সাবেক উপ পরিচালক ডা. সুলতান আহমেদ, প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা পরিষদের সদস্য শামসুর রহমান মেধা ও আনোয়ারুল ইসলাম বুলবুল, শিক্ষক প্রতিনিধি ডা. আইনুর রহমান, শিক্ষক ডা.রবিউল ইসলাম ও ডা.আব্দুল্লাহ আল মামুন, কর্মকর্তা কর্মচারীর পক্ষে সাহাবুদ্দিন, স্থানীয় ব্যক্তি শামসুল ইসলাম ও হুমায়ুন আলি, ডা.আব্দুল্লাহ মামুন, শিক্ষার্থী মোস্তাক নুর ইসলাম, মমতাজ ও হয়রত আলীসহ অন্যরা। সভা শেষে শিক্ষক কর্মকর্তা কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের পক্ষে উপজেলা নির্বাহী অফিসার নিশাত আনজুম অনন্যার নিকট স্মারকলিপি দেন শিক্ষক প্রতিনিধি ডা. আইনুর রহমান।
কলেজের শিক্ষার্থী মমতাজ বলেন, আমরা কলেজের ছাত্রী না, আমরা সকলে মিলে একটি পরিবার। পরিবারের একটি সদস্যদের মধ্যে কেউ দুর্নীতি নিয়ে আসে, তাহলে তারা বসে থাকবে না। আমাদের প্রিন্সিপাল স্যাবের বিরুদ্ধে দুর্নীতি অভিযোগ আনার একটাই কারণ তিনি উন্নয়ন করছেন। বাইরের কেউ এটা সহ্য করতে পারছেন না। বর্তমান প্রিন্সিপাল ও সাবেক প্রিন্সিপাল কতটুকু উন্নয়ন ও কতটুকু অবনতি যাচাই করলে বুঝা যাবে।
প্রতিষ্ঠানটির প্রভাষক ও পরিচালনা পরিষদের শিক্ষক প্রতিনিধি ডা. আইনুর রহমান বলেন, রহনপুর হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালটি ১৯৯৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হলেও স্বীকৃতি পায় ২০১১ সালে। প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ ছিলেন ডা. আতাউল্লাহ। সনদের দোহাই দিয়ে তাকে বিতাড়িত করে ২০০৭ সালে ১৩ নভেম্বর অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) দায়িত্ব গ্রহণ করেন ডা. মফিজউদ্দীন। তখন থেকে তিনি কলেজ ধ্বংসের পায়তারা শুরু করেন। তার কর্মকালের অডিট করলে থলের বিড়াল বেরিয়ে আসবে। কলেজ ও হাসপাতালের নিয়ম শৃঙ্খলা ভঙ্গের কারণে কলেজ শিক্ষক ডা. আব্দুল ওয়াদুদ এবং স্টোরকিপার রফিকুল ইসলাম বোর্ড কর্তৃক অপসারিত হওয়ার তারা দুজন ডা. মফিজ উদ্দিনের যোগসাজগে বর্তমান অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) ডা. হাবীবুল্লাহ'র নামে মিথ্যা অফিযোগে দায়েরের হীন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। বর্তমান অধ্যক্ষকে হেনন্থা করতে পারলেই বা পরাজিত করলেই তিনি পরিচালনা পরিষদের সদস্য হবেন এবং ছেলেকে কলেজে নিয়োগ দিতে পারবে। তাছাড়া বহিষ্কৃত ওই দুজনকে পুনর্বহাল করবেন।
ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সাবেক কর্মকর্তা ডা. সুলতান আহমেদ বলেন, ডা. মফিজ উদ্দিন ২০০৮ সালে নির্বাচন করার জন্য ব্যক্তিগত অসুবিধা দেখিয়ে কলেজ সভাপতি ডা. হাবিবুর রহমানের কাছে পদত্যাগ পত্র জমা দেন। সেইদিনই সভাপতি পদত্যাগপত্র মঞ্জুর করেন। নির্বাচনে ভরাডুবি খেয়ে আবারও অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) পদটি দখল করেন। কলেজে অবসরে চলে যাওয়ার সময় উন্নয়ন তহবিলে ৭ লক্ষ টাকা ছিল কিন্তু ওই সময়ে সাজানো গোছানো ভাওচারের মধ্যে দিয়ে পকেটে নিয়ে গেছেন। আপনি সিনিয়র জুনিয়র না দেখে হাবীবুল্লাহকে অধ্যক্ষের আসনে বসিয়ে গেছেন। কেন হাবীবুল্লাহ আপনার কাছে অপ্রিয়। ম্যানেজিং কমিটির সদস্য হতে পারেননি তাই। আপনার ছেলেকে কলেজে ঢুকাতে পারেন নি তাই। সব জলাঞ্জলি ভুলে গিয়ে কলেজে পাশে দাড়াই, ছাত্রদের পাশে দাড়াই। গভনিং বডির সঙ্গে ভালোবাসা স্থাপন করুন।
প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) হাবীবুল্লাহ বলেন, সাবেক এমপি'র সুপারিশে গোমস্তাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাছে রহনপুর হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের অধ্যক্ষকে জড়িয়ে তদন্ত কমনা করে অফিযোগপত্র দেন। ওই অফিযোগ পত্রের আলোকে ইউএনও মহোদয় উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তাদের তদন্তের দায়িত্ব দেন।তিনি কলেজে এসে সকলের উপস্থিতি তদন্ত করেন। তিনি নানাবিধ অভিযোগ আনেন। কিন্তু কোনটাই তিনি প্রমানিত করতে পারে নি। ওই তদন্তে পুরোটাই কলেজের পক্ষে এসেছে। এখন পর্যন্ত তিনি ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। কয়েকদিন আগে গুটি কয়েকজনকে নিয়ে মানববন্ধন করেছেন ও তার পদত্যাগ চেয়ে স্মারকলিপি দিয়েছেন। যা সম্পূর্ণ আইনবিরোধী।
এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নিশাত আনজুম অনন্যা বলেন, বিষয়টি নিয়ে অতি শ্রীঘই পরিচালনা পরিষদের সভা করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে।