রবিবার, ২৯শে পৌষ ১৪৩১, ১২ই জানুয়ারী ২০২৫
BD NEWS LIVE 99
BD NEWS LIVE 99

নির্বাচনি অপরাধের সাথে জড়িতদের বিচার হওয়া উচিত : বদিউল আলম মজুমদার


নিউজ ডেস্ক

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) এর সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী পালিয়ে যাওয়ার পর তাদের অনেকেই পালিয়ে গেছে। নেতৃত্ব দেওয়ার মতো কাউকে এখন খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। আওয়ামী লীগ ছাড়া জাতীয় নির্বাচন হলে সে নির্বাচন অগ্রহণযোগ্য হবে না। আমি-ডামি, একতরফা ও মধ্যরাতের নির্বাচন করে আওয়ামী লীগ এ দেশে নির্বাচনি ব্যবস্থাকে সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করেছে।

তিনি আরও বলেন, গত তিনটি নির্বাচনে নির্বাচন কমিশন, পুলিশ, প্রশাসন, রিটার্নিং অফিসার, পোলিং অফিসারসহ নির্বাচনের সাথে যুক্ত প্রায় সবাই অপরাধী কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত ছিল। নির্বাচন কমিশন নির্বাচন ব্যবস্থাকে বিভিন্ন অজুহাতে দলীয়করণ করে সংবিধানের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন করেছে। আদালতের নির্দেশ অমান্য করেছে। অতিউৎসাহী হয়ে পক্ষপাতদুষ্ট আচারণ করেছে। তাই নির্বাচনি অপরাধে অভিযুক্ত সকল ব্যক্তিদের বিচারের বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা উচিত।

সুজন সম্পাদক বলেন, বর্তমান সরকার তত্ত্বাবধায়ক সরকার নয়। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছিল রুটিন সরকার। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে ১৫-১৬ বছরের জঞ্জাল দূর করতে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে। তারপরও জাতীয় নির্বাচন বিলম্বিত হলে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি জনগণের আস্থা হ্রাস পেতে পারে। ২৮ অক্টোবর পরিকল্পিতভাবে নয়াপল্টনে হামলা চালিয়ে বিএনপিকে নির্বাচনের বাইরে রাখার বিষয়ে নির্বাচন কমিশন দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিয়েছে। নির্বাচনের জন্য সমতল ক্ষেত্র প্রস্তুত করতে পারেনি। সেসময় উদ্দেশ্য প্রণোদিত হয়ে সরকারের রূপরেখা বাস্তবায়নের জন্য কয়েকটি কথিত দলকে নিবন্ধন দিয়েছে।

শনিবার বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশনে (বিএফডিসি) গণতন্ত্র সুরক্ষায় রাষ্ট্র মেরামত এবং জাতীয় নির্বাচন নিয়ে আয়োজিত ছায়া সংসদে এসব কথা বলেন সুজনের সম্পাদক। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ।

সভাপতির বক্তব্যে হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, এদেশের মানুষ ভুলে যায়নি কিভাবে দিনের ভোট রাতে হয়েছিল। মৃত মানুষ ভোট দিয়েছে। বিদেশে অবস্থানরত ব্যক্তিরাও ভোট প্রদান করেছে। কোথাও কোথাও শতভাগ ভোট পড়েছে। শিশুরাও ভোট দিয়েছে। আমি আর ডামি প্রার্থীর নির্বাচন হয়েছিল। একই ব্যক্তি ভোট দিয়ে আবার লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দিয়েছে। বারবার ভোট দিয়েছে। ভোট কেন্দ্রে সাংবাদিকদের প্রবেশাধিকার নিষিদ্ধ ছিল। ৮ থেকে ১০ শতাংশ ভোট পড়লেও ভোটের সংখ্যা বাড়িয়ে ৪০ থেকে ৪৫ শতাংশ দেখানো হয়েছিল।

কিরণ আরও বলেন, নির্বাচন ব্যবস্থার সংস্কার ব্যতীত রাজনৈতিক দলগুলো দ্রুত নির্বাচন আয়োজনের চাপ দিলে গণতন্ত্রের অভিযাত্রা ব্যাহত হতে পারে। ছাত্র-জনতার রক্তক্ষয়ী বিপ্লবে যে বিজয় অর্জিত হয়েছে সে বিজয়ের সুফল ব্যাহত হবে। তাই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে নির্বাচন ব্যবস্থার সংস্কারসহ রাষ্ট্র সংস্কারে কাজ করতে প্রয়োজনীয় সময় প্রদান করা উচিত। তবে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কারের পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আগামী জাতীয় নির্বাচন আয়োজন নিয়ে একটি গ্রহণযোগ্য রোড ম্যাপ ঘোষণা করবেন বলে সকলের প্রত্যাশা।

আগামী জাতীয় নির্বাচনসহ পরবর্তী সকল নির্বাচন সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য করার লক্ষ্যে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান ১০ দফা সুপারিশ করেন।

১০ দফা সুপারিশ-

১.নির্বাচন ব্যবস্থার সংস্কারের পর একটি পূর্ণাঙ্গ নির্বাচনি রোডম্যাপ জাতির সামনে ঘোষণা করা।
২.অভিজ্ঞ, সৎ ও যোগ্য ব্যক্তিদের সমন্বয়ে নির্বাচন কমিশন গঠন করা। যারা কোনো চাপে বা লোভে মাথানত করবে না।
৩. তত্ত্বাবধায়ক বা অন্তর্বর্তী সরকার সংবিধানের অন্তভুর্ক্ত করে নির্বাচনকালীন দল নিরপেক্ষ ব্যক্তিদের দ্বারা জাতীয় নির্বাচনের আয়োজন বিধান রাখা।
৪.বিদ্যমান সংসদীয় ব্যবস্থার পাশাপাশি বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিদের সমম্বয়ে দেশের বিশিষ্ট নাগরিক, প্রথিতযশা শিক্ষাবিদ, পেশাজীবী, রাষ্ট্রবিজ্ঞানী, সমাজবিজ্ঞানী ও প্রশাসনিক অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ব্যক্তিদের সমন্বয়ে সংসদে উচ্চকক্ষ বিশিষ্ট আইনসভা প্রবর্তন করা।
৫.ইভিএম এ ভোট প্রদানে কারচুপির শঙ্কা বেশি থাকায় এবং ইতঃপূর্বে ইভিএম এ ভোট জালিয়াতির ঘটনা প্রমাণিত হওয়ায় পেপার ব্যালটের মাধ্যমে ভোট আয়োজন করা।
৬. নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কারের লক্ষ্যে সদ্য ঘোষিত কমিশনকে এজেন্ডা ভিত্তিক রাজনৈতিক দলসহ নাগরিক সংগঠন গুলোর সাথে সংলাপের আয়োজন করা।
৭. দুর্নীতিবাজ, টাকা পাচারকারী, ব্যাংক লুটেরাসহ ঋণ খেলাপিরা কোনোভাবেই যাতে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে না পারে সেই জন্য কঠিন আইনের বিধান রাখা।
৮. পরপর দুই মেয়াদের অতিরিক্ত কেউ প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করতে না পারার বিধান রাখা।
৯. একটি নিভুর্ল ভোটার তালিকা প্রণয়ন করে তা নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা।
১০. বিগত কয়েকটি নির্বাচনকে যেসব কমিশন বা যারা বিতর্কিত ও প্রশ্নবিদ্ধ করেছে তাদেরকে আইনের আওতায় আনার বিধান তৈরি করা।

ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র আয়োজনে ‘গণতন্ত্র সুরক্ষায় রাষ্ট্র মেরামত এবং জাতীয় নির্বাচন’ শীর্ষক প্রস্তাবে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিতার্কিকদের পরাজিত করে ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি-এর বিতার্কিকরা বিজয়ী হয়।

প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন সাংবাদিক সাইদুল ইসলাম, আলমগীর স্বপন, মসিউর রহমান খান, জাহিদ রহমান ও আহম্মদ ফয়েজ। প্রতিযোগিতা শেষে চ্যাম্পিয়ন দলকে ট্রফি, ক্রেস্ট ও সনদপত্র প্রদান করা হয়।

প্রতিযোগিতায় প্রস্তাবের পক্ষে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিপক্ষে ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি’র বিতার্কিকরা অংশগ্রহণ করে।

Share:
মন্তব্য সমুহ
মন্তব্য করতে লগইন করুন অথবা নিবন্ধন করুন
আর্কাইভ

Follow Us

এলাকার খবর

ad

ফিচার নিউজ

৩৫ মিনিট পূর্বে / চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলা

আদ দাওয়াহ ইলাল্লাহ যুব সমাজ দেবীনগর এর উদ্যোগে…

২রা জানুয়ারী ২০২৫ বিকাল ০৫:৩৫ / চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা

গোমস্তাপুরে বুরো বাংলাদেশ এনজিওর শীতবস্ত্র বিতরণ

২রা জানুয়ারী ২০২৫ বিকাল ০৫:১৩ / শিবগঞ্জ উপজেলা

শিবগঞ্জে জাতীয় সমাজসেবা দিবস পালিত

১৬ই ডিসেম্বর ২০২৪ দুপুর ০১:৪১ / জাতীয়

জাতীয় পতাকা বুকে নিয়ে জামিয়া আরাবিয়া নুরুল ইসলাম…

১৬ই ডিসেম্বর ২০২৪ দুপুর ০১:২৫ / বিনোদন

দেড় দশক পর বিজয়ের উৎসবে একসঙ্গে ওরা চারজন

১৬ই ডিসেম্বর ২০২৪ দুপুর ০১:১৪ / আন্তর্জাতিক

বাংলাদেশ নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের গভর্নরের সঙ্গে কংগ্রেসের বৈঠক

১৫ই ডিসেম্বর ২০২৪ রাত ১০:২২ / জাতীয়

ইজতেমা ময়দানেই জোড় করার ঘোষণা সাদপন্থিদের