চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি
চাঁপাইনবাবগঞ্জের ফসলের ক্ষেতগুলোয় যতদূর চোখ যায় শুধু হলুদের সমারোহ। কি চরাঞ্চল, কি বরেন্দ্র অঞ্চল আর কি বিলাঞ্চল সবখানেই বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে চাষ হয়েছে সরিষার। এমন কি নদীর বুকে জেগে ওঠা চরেও সরিষার আবাদ হয়েছে।
কৃষি বিভাগ বলছে, আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এ বছর চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় সরিষার বাম্পার ফলন হবে। কৃষকরাও আশা করছেন, সামান্য পরিচর্যা করেই বেশি লাভের।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের পাঁচ উপজেলার বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে কৃষকরা সরিষার চাষাবাদ করেছেন চাষিরা। প্রতিটি মাঠ সরিষার হলুদ ফুলে সেজেছে। তবে আগাম আবাদ করা সরিষা এরই মধ্যে কাটা-মাড়াই শুরু হয়েছে। আবার অনেকেই আমন ধান কাটা শেষে জমিগুলো পতিত না রেখে অতিরিক্ত ফসল হিসেবে সরিষা চাষ করেছেন। অন্যদিকে ময়ালিরা সরিষার ফুল থেকে মধু সংগ্রহে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
কৃষক নাসিরুদ্দীন জানান, বেশ কয়েক বিঘা সরিষা চাষ করেছি। গত বছরের তুলনায় এ বছর খরচ একটু বেড়েছে। সরিষার বীজের দাম, শ্রমিকের মজুরি, হাল, সেচসহ অন্যান্য খরচ বেশি হলেও অতিরিক্ত ফসল হিসেবে চাষ করে থাকি। যাতে আমরা ধানের পাশাপাশি তেলের চাহিদা পূরণ করতে পারি।
কৃষক শামশুদ্দীন জানান, এক বিঘা জমিতে সরিষা চাষ করতে খরচ হয় ৭ থেকে ৮ হাজার টাকা। প্রতি বিঘাতে সরিষা পাওয়া যায় ৪ থেকে ৫ মণ। যার বাজারমূল্য ২০-২২ হাজার টাকা। খরচ বাদ দিয়ে কিছুটা লাভ থাকে। আবার সময়ে অন্য ফসলও চাষ করা যায়।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. পলাশ সরকার জানান, আমন ধান কাটতে দেরি হওয়ায় এ বছর কিছুটা দেরিতে সরিষার আবাদ শুরু হয়। তবে এ বছর সরিষার আবাদ রেকর্ড পরিমাণ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে বাম্পার ফলন পাওয়া যাবে। কৃষকদের সব ধরনের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
তিনি আরো জানান, এবার চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর, শিবগঞ্জ, গোমস্তাপুর, নাচোল ও ভোলাহাট উপজেলায় ৩০ হাজার ৫৫০ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। এবার সরিষার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪৫ হাজার ৫২০ মেট্রিক টন।